৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০৮:৪৯

ইজতেমা অভিমুখে মুসল্লির ঢল

অনলাইন ডেস্ক

ইজতেমা অভিমুখে মুসল্লির ঢল

টঙ্গীর তুরাগ তীরে আজ শুক্রবার (৮ জানুযারি) বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে ৫১তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফা। শীত ও যানজট উপেক্ষা করে ইতোমধ্যে লাখ লাখ মুসল্লি বাস, ট্রাক, পিক-আপ, লঞ্চ ও ট্রেনে করে জমায়েত হয়েছেন ইজতেমার ময়দানে। আসছেন এখনও। পথে পথে মুসল্লির ঢল। মাথায় ও কাঁধে ব্যাগ, কাপড়ের গাট্টি, হাড়ি-পাতিলসহ প্রয়োজনীয় নানা সামগ্রী।

শুক্রবার সকালে রাজধানী থেকে টঙ্গী যাওয়ার পথগুলোয় দেখা গেছে মুসল্লিদের ভিড়। যে যার মতো ছুটছেন ইজতেমা অভিমুখে। বিভিন্ন এলাকা থেকে দল বেধে তরুণরাও রওনা হয়েছেন, উদ্দেশ্য জুম্মার নামাজটা ইজতেমা ময়দানে আদায় করা।

বিদেশি মুসল্লিরাও আসছেন। তাদের অনেকে গত কয়েকদিন আগেই এসে পৌঁছেছেন ময়দানে। প্রথম ধাপে আখেরি মোনাজাতের দিন পর্যন্ত মুসল্লিদের এ আগমন অব্যাহত থাকবে। ১০ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের প্রথম দফার ইজতেমা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে দেখা গেছে রাতের কনকনে শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার মুসল্লি বাস, ট্রেন, ট্রাক, পিকআপ ও লঞ্চে করে টঙ্গীর ইজতেমাস্থলে পৌঁছাচ্ছেন। তাদের কাঁধে ও মাথায় প্রয়োজনীয় মালামালের ব্যাগ, বস্তা ও লাগেজ।

পটুয়াখালী থেকে আসা মুসল্লি আবদুল কাশেম আলী জানান, ‘ইজতেমায় তিন দিনের জামায়াত ও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বাস রিজার্ভ করে ৫২ জনের একটি দল ইজতেমার ময়দানে এসে পৌঁছেছেন। পথে কোন সমস্যা হয়নি। ইবাদত বন্দেগি ও আখেরি মোনাজাত শেষে ফের বাস নিয়ে এক সাথে সবাই বাড়ি ফিরে যাবো। আল্লাহ নৈকট্য লাভের আসায় এখানে আসা।’

বিদেশি নিবাসের পূর্বপাশে আখেরি দোয়া মঞ্চ ও ময়দানের পশ্চিমে বয়ান মঞ্চ থেকে দক্ষিণে তুরাগ তীরে বয়ান ও নামাজের মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। তুরাগ তীরে ভাসমান সেতুনির্মাণ, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির লাইন সংযোগসহ সকল কাজ শেষ হয়ে গেছে।

২৭ খিত্তায় ১৭ জেলার মুসল্লি

এবারের ইজতেমায় মোট দুই দফায় ৩২টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। প্রথম দফায় ঢাকা জেলাসহ ১৭টি এবং দ্বিতীয় দফায় ঢাকা জেলাসহ ১৬টি জেলা অংশ নেবে ইজতেমায়। ঢাকা জেলার মুসল্লিরা ইজতেমার দুই পর্বেই অংশ নেবেন। প্রথম দফার ইজতেমার অংশ নিতে ইতোমধ্যেই ১৭ জেলার মুসল্লিদের জন্য ময়দানকে ২৭টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।
 
স্বাস্থ্যবিভাগের ছুটি বাতিল

বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দিতে ৭ জানুয়ারি থেকে ইজতেমা চলাকালীন জেলার কর্মরত স্বাস্থ্য বিভাগের সকল চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট টঙ্গী সরকারি হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এ ছাড়া জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগ, অর্থোপেডিক, ট্রমা সেন্টার, অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি ইউনিট খোলা হয়েছে। হাসপাতালে ১৪টি এ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ডবাই থাকবে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতে ১৫টি স্যানিটেশন টিম এবার ইজতেমা মাঠের আশপাশ এলাকার হোটেল ও রেস্তোরা যেন মানসম্মত খাবার পরিবেশন করে সে লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে।

কার খিত্তা কোথায়

ইজতেমার প্রথম ধাপে আগত ১৭টি জেলার মুসল্লিরা বিভিন্ন খিত্তায় অবস্থান নেবেন। এর মধ্যে ঢাকা জেলা ১ থেকে ৬ নং খিত্তায়, শেরপুর ৭ নং খিত্তা, নারায়ণগঞ্জ ৮ ও ১১ নং খিত্তা, নীলফামারী ৯ নং খিত্তা, সিরাজগঞ্জ ১০ নং খিত্তা, নাটোর ১২ নং খিত্তা, গাইবান্ধা ১৩ নং খিত্তা, লক্ষীপুর ১৪ ও ১৫ নং খিত্তা, সিলেট ১৬ ও ১৭ নং খিত্তা, চট্রগ্রাম ১৮ ও ১৯ নং খিত্তা, নড়াইল ২০ নং খিত্তা,  মাদারীপুর ২১ নং খিত্তা, ভোলা ২২ ও ২৩ নং খিত্তা, মাগুড়া ২৪ নং খিত্তা, পটুয়াখালী ২৫ নং খিত্তা, ঝালকাঠি ২৬ নং খিত্তা এবং পঞ্চগড় জেলার মুসল্লিরা ২৭ নং খিত্তায় অবস্থান নেবেন।

এছাড়া ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা জেলার মুসল্লিরা ১ থেকে ৭ নং খিত্তা, ঝিনাইদহ ৮ নং খিত্তা, জামালপুর ৯ ও ১১ নং খিত্তা, ফরিদপুর ১০ নং খিত্তা, নেত্রকোনা ১২ ও ১৩ নং খিত্তা, নরসিংদী ১৪ ও ১৫ নং খিত্তা, কুমিল্লা ১৬ ও ১৮ নং খিত্তা, কুড়িগ্রাম ১৭ নং খিত্তা, রাজশাহী ১৯ ও ২০ নং খিত্তা, ফেনী ২১ নং খিত্তা, ঠাকুরগাঁও ২২ নং খিত্তা, সুনামগঞ্জ ২৩ নং খিত্তা, বগুড়া ২৪  ও ২৫ নং খিত্তা,  খুলনা ২৬ ও ২৭ নং খিত্তা, চুয়াডাঙ্গা ২৮ নং খিত্তা এবং পিরোজপুর জেলার মুসল্লিরা ২৯ নং খিত্তায় অবস্থান নেবেন।

বিডি-প্রতিদিন/০৮ জানুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ

সর্বশেষ খবর