২৭ আগস্ট, ২০১৬ ১০:০০
বায়তুল মোকাররমের খুতবা

বিত্তশালী লোকের ওপর হজ ফরজ

মুফতি এহসানুল হক জিলানী, পেশ ইমাম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ।


বিত্তশালী লোকের ওপর হজ ফরজ

সব প্রশংসা মহান আল্লাহতায়ালার, যিনি আমাদের ইসলামের দিকে পথপ্রদর্শন করেছেন, পবিত্র কাবাঘরকে মানব জাতির জন্য মিলনকেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল বানিয়েছেন এবং হজকে ইসলামের রুকনসমূহের মধ্যে মূল রুকন করেছেন। আর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহের মাধ্যমে আমাদের হজের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। আমি সেই মহান সত্তার প্রশংসা করছি, তার কাছে তওবা করছি এবং তারই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি সাক্ষ্য দান করছি, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই। তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দান করছি, আমাদের সরদার হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার বান্দা ও রসুল। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের যে সংবাদ প্রদান করেছেন, তাতে তিনি অবশ্যই সত্যবাদী। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের সরদার হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি করুণা, শান্তি ও বরকত বর্ষণ করুন ও তার সব বংশধর ও সঙ্গী-সাথী এবং স্ত্রীগণের ওপরও। বিত্তশালী সামর্থ্যবান লোকের ওপর নামাজ ও জাকাতের ন্যায় হজও ফরজ। আর যেসব রুকনের ওপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত, এটি হচ্ছে তার অন্যতম রুকন। এর ফরজিয়্যাত অস্বীকারকারী কাফির। মহান আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই মানব জাতির জন্য সর্বপ্রথম যে গৃহ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা তো বাক্কায় (মক্কায়) অবস্থিত— যা বরকতময় ও সারা জাহানের জন্য দিশারী। এতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে, যেমন মাকামে ইব্রাহিম। আর যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ এবং মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার (পৌঁছার) সামর্থ্য রয়েছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে সে গৃহে হজ করা তার ওপর অবশ্য কর্তব্য। আর যে কেউ তা প্রত্যাখ্যান করবে (জেনে রাখুক), আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন। হজ জীবনে একবার আদায় করা ফরজ, এর অতিরিক্ত যা, তা নফল। আল্লাহতায়ালা ইব্রাহিম (আ.)-কে সেই পবিত্র গৃহ, যার দিকে মুসলমানরা ফরজ ও নফল নামাজ আদায়ের সময় মুখ করে, তা নির্মাণ শেষে এ আদেশ করেছিলেন যে, তুমি মানুষকে হজের জন্য আহ্বান কর। মহান আল্লাহ বলেন— (হে ইব্রাহীম!) তুমি মানুষের কাছে হজের ঘোষণা দাও। তারা পায়ে হেঁটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে পথ অতিক্রম করে তোমার কাছে আসবে।

আপনারা তাড়াতাড়ি হজ আদায় করুন। কেননা রসুল (সা.) বলেছেন, যে হজ আদায়ের ইচ্ছা রাখে, সে যেন তাড়াতাড়ি হজ করে। সুতরাং আপনাদের হৃদয়ে মানব ও জিন শয়তানের ধোঁকা দেওয়ার আগেই হজ আদায় করুন। আল্লাহতায়ালা বলেন— শয়তান তোমাদের অভাব-অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে ও অশ্লীলতার নির্দেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদের তার ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সুবিজ্ঞ। যে ব্যক্তি আল্লাহর গৃহে (হজের জন্য) যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, সে যেন হালাল সম্পদের দ্বারা প্রয়োজনীয় খানাপিনা, বাহন ও পরিধেয় পোশাকের ব্যবস্থা করে নেয়। কারণ এ পবিত্র সময়ে মানুষের কাছে কিছু চাওয়া উচিত নয়।

আপনার যা চাওয়ার, তা আল্লাহর কাছেই চান।  তিনি তো দোয়া শ্রবণকারী, তিনি ফকিরও নন, বখীলও নন। তিনি প্রার্থনাকারীর প্রার্থনা মঞ্জুর করেন, যখনই তার কাছে প্রার্থনা করা হয়। আর তিনি মহা অনুগ্রহশীল।

বিডি-প্রতিদিন/২৭ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব

 

সর্বশেষ খবর