২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০৮:৪৫

মানুষকে ভাষার ভিন্নতা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে

মাওলানা মুহম্মাদ আশরাফ আলী

মানুষকে ভাষার ভিন্নতা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে

জীবজগতের মধ্যে একমাত্র মানুষই কথা বলতে পারে। ভাষা মানুষের প্রতি মহান আল্লাহর একটি নেয়ামত। সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা মানুষকে ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, আর মহান আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে (একটি নিদর্শন হলো) আসমান ও জমিন সৃষ্টি এবং মানুষের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা। এর মধ্যে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ রয়েছে। (সূরা রুম : আয়াত : ২২)। ওই আয়াতে পৃথিবীর মানুষের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতাকে আল্লাহতায়ালা তাঁর একটি নিদর্শন বলে আখ্যায়িত করেছেন। সুন্দর ভাষায় বক্তব্য উপস্থাপন ও উত্তম বাচনভঙ্গিতে কথা বলতে অপারগতার কারণেই হজরত মূসা (আ.) দীনের দাওয়াত নিয়ে ফিরাউনের কাছে যাওয়ার সময় সুন্দর ভাষা ও হৃদয়গ্রাহী কথাবার্তায় পারঙ্গম স্বীয় ভাই হারুন (আ.)-কে নিজের সঙ্গী করার জন্য আল্লাহতায়ালার কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছিলেন : ‘আমার ভাই হারুন, তিনি আমার থেকে অনেক বেশি প্রাঞ্জল ভাষী। তাই আপনি তাকে আমার সহযোগী করে প্রেরণ করুন; যাতে সে আমাকে (দাওয়াতের ক্ষেত্রে তার প্রাঞ্জল ভাষার দ্বারা) সত্যায়িত করে। কেননা আমি আশঙ্কা করছি (আমার বক্তব্য সত্য হওয়া সত্ত্বেও) তারা আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করবে।’ (সূরা কাসাস; আয়াত : ৩৪) 

আল্লাহতায়ালা মানুষের হেদায়াতের জন্য পৃথিবীতে যেসব নবী রসুল প্রেরণ করেছেন, তাঁদের সবার কাছে মাতৃভাষায় আল্লাহর ওহি প্রেরিত হয়েছে। যাতে তাঁরা তাঁদের জাতিকে সুস্পষ্ট ভাষায় আল্লাহতায়ালার হুকুম সম্পর্কে অবহিত করতে পারেন। হজরত মূসা (আ.)-এর ওপর তাওরাত শরিফ অবতীর্ণ হয়েছে হিব্রু ভাষায়, হজরত দাউদ (আ.)-এর ওপর জবুর শরিফ অবতীর্ণ হয়েছে ইউনানি ভাষায়, আর হজরত ঈসা (আ.)-এর ওপর ইঞ্জিল শরিফ অবতীর্ণ করেছেন সুরিয়ানি ভাষায়। শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কোরআন আরবি ভাষায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘আমি প্রত্যেক নবীকেই তাঁর নিজ নিজ জাতির ভাষায় প্রেরণ করেছি; যেন তিনি তাদের সুস্পষ্টভাবে বুঝাতে পারেন।’ (আল কোরআন, সূরা ইব্রাহিম, আয়াত : ০৪)

 লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর