৪ মার্চ, ২০১৮ ০৮:২১

কোরআন তিলাওয়াতে অপরিসীম কল্যাণ

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

কোরআন তিলাওয়াতে অপরিসীম কল্যাণ

কোরআন তিলাওয়াতের মধ্যে রয়েছে অপরিসীম কল্যাণ। আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের সর্বোত্কৃষ্ট উপায় হলো প্রতিদিন এই পবিত্র গ্রন্থের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা। কিছুটা হলেও তা তিলাওয়াত করা। বিশেষ করে সূরা ইয়াসিন, সূরা দুখান, সূরা ওয়াকিয়াহ ও সূরা মূলকের তিলাওয়াত নিজের দৈনিক আমলে পরিণত করা উচিত। জুমার রাতে ও জুমার দিনে এসব সূরার তিলাওয়াতের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। সূরা কাহাফ ও সূরা আলে ইমরান তিলাওয়াতের মরতবাও অপরিসীম। কোরআন তিলাওয়াতের ব্যাপারে নবী করিম (সা.) থেকে হাদিস বর্ণিত রয়েছে। ১. হজরত মা’য়াকাল ইবনে ইয়াসার (রা.)-এর বর্ণনা। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুধু আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ এবং পরকালের উদ্দেশ্যে এসব সূরা তিলাওয়াত করবে আল্লাহতায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। তোমরা নিজেদের মৃত লোকদের জন্যও এগুলো পাঠ করবে।’ (আবু দাউদ, নাসাই)। ২. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে, যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাতে সূরা মূলক তিলাওয়াতকে নিজের অভ্যাসে পরিণত করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে কবর আজাব থেকে নিরাপদ রাখবেন। আমরা নবী করিম (সা.)-এর যুগে সূরা মূলককে আল মানেয়া (কবর আজাব নিরোধকারী) বলতাম। এটি আল্লাহর কিতাবের একটি বরকতময় সূরা। যে ব্যক্তি রাতে এটি তিলাওয়াত কবরে সে অগণিত বরকত লাভ করতে পারবে। ৩. হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে এমনি একটি বর্ণনা উল্লেখ রয়েছে যে, ‘কোনো লোক রাতে সূরা দুখান তিলাওয়াত করলে তার প্রভাত এমন অবস্থায় হয় যে, ৭০ হাজার ফিরেশতা তার জন্য মাগফিরাত কামনা করতে থাকেন।’ ৪. হজরত আবু সাইদ (রা.)-এর বর্ণনা, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা আলে ইমরান তিলাওয়াত করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা তার প্রতি রহমত নাজিল করেন। আর ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকেন।’ (তিবরানি ও অন্যান্য)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে সূরা ওয়াকিয়ার ফজিলত সম্পর্কে কয়েকটি (মরফু ও মওকুফ) হাদিস বর্ণিত আছে, ‘কেননা সূরাটিতে প্রতিদান, শাস্তি ও হাশরের ময়দানে বিচার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।’ সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের এই সূরাটি পাঠের সৌভাগ্য থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। দিনে একবার অবশ্যই এ সূরা পাঠ করা উচিত এবং রাতে পাঠ করা অধিক ফজিলতপূর্ণ। জুমার দিনে ও রাতে একবার পাঠ করা খুবই ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়েছে। আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সূরা আলে ইমরান পাঠ খুবই উত্তম। কেননা এ সময়টি দোয়া কবুলের সময়। সুতরাং এ সময় উত্তম ইবাদত অর্থাৎ তিলাওয়াতে কোরআনের মধ্যে মশগুল থাকা উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআন তিলাওয়াতের তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলাম বিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর