২১ মার্চ, ২০১৮ ০৮:০৯

ক্ষমা করার মালিক একমাত্র আল্লাহ

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

ক্ষমা করার মালিক একমাত্র আল্লাহ

মৃত্যুকে এড়ানোর ক্ষমতা কারোর নেই। ‘জন্মিলে মরিতে হইবে’ এটি আল্লাহর বিধান। তাই কবরের জীবনের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। দুনিয়ার জীবনের পাপাচারের জন্য কবরের জীবন যাতে কণ্টকিত না হয় সেজন্য আল্লাহর কাছে সদাসর্বদা ক্ষমা চাইতে হবে। আল্লাহ বান্দার পাপ ক্ষমা করার মালিক। কাকে মাফ করে দেওয়া হবে, আর কাকে শাস্তি দেওয়া হবে, তা তিনিই শুধু জানেন। তবে আল্লাহর দরবারে সবসময় ক্ষমার আশা রাখতে হবে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক যুবকের কাছে গেলেন, যখন সে মৃত্যুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি নিজেকে কী অবস্থায় মনে করছ? সে উত্তর দিল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমি আল্লাহর রহমতের আশা করছি, আবার নিজের গুনাহের জন্য ভয়ও পাচ্ছি। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন মুহূর্তে যার অন্তরে এ দুটি জিনিস একত্রিত হয় তাকে আল্লাহ আশার বস্তুটি দান করেন আর যে জিনিসটি থেকে সে ভয় পায় সে জিনিস থেকে আল্লাহ তাকে নিরাপদ করে দেন। (তিরমিজি)। প্রকৃতপক্ষে যারা আখিরাতের প্রস্তুতি গ্রহণে ব্যস্ত তারাই বুদ্ধিমান। হজরত শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে নিজের প্রবৃত্তিকে অনুগত রাখে এবং মৃত্যু-পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করে যায়। আর নির্বোধ সেই ব্যক্তি, যে কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং আল্লাহর কাছে (মুক্তির) আশা করে বসে থাকে। (তিরমিজি)। আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবন একেবারেই তুচ্ছ। হজরত মুসতাওরিদ ইবনে শাদ্দাদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহর কসম! আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার উদাহরণ কেবল এতটুকুই যে, তোমাদের কেউ সমুদ্রে তার আঙ্গুলটি চুবিয়ে নিল। এবার সে দেখুক, এ আঙ্গুল কতটুকু পানি নিয়ে এসেছে। (মুসলিম)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন, দুনিয়ায় এমনভাবে থাকো যে, তুমি একজন প্রবাসী মুসাফির অথবা একজন পথচারী। (বুখারি)। এ দুনিয়ার কোনো মূল্য আল্লাহর দরবারে নেই। হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি দুনিয়া আল্লাহর কাছে মশার ডানার সমানও মূল্যবান হতো তাহলে কোনো কাফিরকে এ থেকে এক চুমুক পানিও পান করতে দিতেন না। (আহমদ, তিরমিজি)। সবারই জানা প্রিয় জিনিস কেউ তার অপছন্দের কাউকে দেয় না। মহান আল্লাহর কাছে দুনিয়ার কোনো মূল্য নেই বিধায় ধন-দৌলত, সব সম্পদ ইমানদার বা ইমানহীন সবাইকে দান করেন। ইমান-আমল যেহেতু মূল্যবান তাই তা শুধু আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের দান করা হয়। আল্লাহ আমাদের সবার সব গুনাহ মাফ করুন। আমাদের সবাইকে ইমানদার হওয়ার তাওফিক দান করুন।

লেখক :  ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর