১৯ মে, ২০১৮ ০৯:৫৪

দ্বিতীয় তারাবিহর তেলাওয়াত নিয়ে আলোচনা

মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান:

দ্বিতীয় তারাবিহর তেলাওয়াত নিয়ে আলোচনা

সংগৃহীত ছবি

১৮ মে শুক্রবার বাদ ইশা দ্বিতীয় তারাবিহতে কুরআনুল কারীমের সূরা বাকারার ২০৪ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত ও সূরা আল ইমরানের শুরু থেকে ৯১ নং আয়াত পর্যন্ত মোট দেড়পারা তেলাওয়াত করা হয়েছে। এর মধ্যে অতি সংক্ষেপে কিছু কিছু আয়াতের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। ইসলামের নিয়ম কানুন পালনের ক্ষেত্রে কেউ কেউ  নিজেদের ইচ্ছেমত ও সুবিধামত আমল করে থাকেন। 

অথচ ইসলামে এর কোন অবকাশ নেই। ২০৮ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, ইয়া আইয়্যুহাল্লাজীনা আমানুদখুলু ফিসসিলমি কাফফাহ। অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর।  তাহলে ২/১ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, কিছু সুন্নাত আর কিছু বিজাতীয় কালচার অনুস্মরণ করে আমরা কিভাবে নাজাতের আশা করতে পারি?  

২১৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, যদি মদ ও জুয়া সম্বন্ধে তোমাকে কেউ জিজ্ঞাসা করে তবে তুমি বল, এ দুটোই মহাপাপ। তিরমিজী শরীফে হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়, মদের সাথে সম্পর্ক রাখে এমন দশ শ্রেণীর ব্যক্তির উপর হুজুর (সা.) লা’নত করেছেন। আর তারা হলো, ১. যে লোক নির্যাস বের করে, ২. প্রস্তুতকারক, ৩. পানকারী, ৪. যে পান করায়, ৫. আমদানীকারক, ৬. যার জন্যে আমদানী করা হয়, ৭. বিক্রেতা. ৮. ক্রেতা. ৯. সরবরাহকারী ও ১০. এর লভ্যাংশ ভোগকারী। 

বুখারী শরীফের ৪৮৬০ নং হাদীসে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি লাত ও ওজ্জার নামে কসম করে সে যেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। আর যে ব্যক্তি তার সাথীকে বলে এসো, আমরা জুয়া খেলি, তবে তার সদকা করা উচিৎ। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, জুয়া হলো মাইসির বা বঞ্চিত। আর সব রকমের জুয়াই হারাম। 

২৩৩ নং আয়াত মোতাবেক শিশুদের স্তন্যপান করানো মাতার উপর ওয়াজিব আর মাতার ভরণ পোষণ পিতার উপর ওয়াজিব। ২৫৫ নং আয়াতকে আয়াতুল কুরসি বলা হয়। এ আয়াতের ফজিলত সম্বন্ধে অনেক হাদীস রয়েছে। নাসায়ী শরীফে এক হাদীসে রাসূলে কারীম (সা.) বলেন, যে লোক প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পাঠ করে তার জন্য বেহেশতে প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর কোন অন্তরায় থাকে না। 

২৭৫ নং আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা সুদকে হারাম করেছেন। আর ব্যবসাকে করেছেন হালাল। দুনিয়াতে হিন্দু, খ্রিস্টান. বৌদ্ধসহ হাজারো ধর্ম রয়েছে। 

সূরা আলে ইমরানের ১৫ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, ইন্নাদ্দীনা ইনদাল্লাহিল ইসলাম। অর্থাৎ ইসলামই হলো আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম। ৮৫ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্ম অন্বেষণ করে তা কখনও তার নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে না। অন্য ধর্মাবলম্বীরা পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 

অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যাকারীদের ব্যঙ্গ করে ২১ নং আয়াতে আল্লাহ  পাক বলেন, হে নবী, আপনি তাদের জাহান্নামের সুসংবাদ দেন। আর ৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ওয়াাল্লাহু লা ইউহিব্বুয যালিমীন। অর্থাৎ আল্লাহ যালিমদের ভালবাসেন না। আল্লাহর দীন থেকে যারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, আল্লাহকে যারা অবিশ্বাস করেছে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে তারা যদি আল্লাহর আযাব থেকে মুক্তির বিনিময়ে পৃথিবী ভর্তি স্বর্ণ দিতে চায় তবু  কখনো তা গ্রহণ করা হবে না। বরং সূরা আলে ইমরানের ৯১ নং আয়াতে ওদের জন্যে পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ও কোন সাহায্যকারী থাকবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

লেখক: খতীব, দিউ বায়তুস সালাম জামে মসজিদ, কলেজ রোড, ফুলপুর, ময়মনসিংহ। 


বিডি প্রতিদিন/১৯ মে ২০১৮/হিমেল

সর্বশেষ খবর