যেসব অভ্যাস মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো হিংসা-বিদ্বেষ। এটি মানুষের চারিত্রিক ত্রুটিও বটে। আমাদের নবীজি (সা.)-ও হিংসুকের আক্রোশের শিকার হয়েছেন। তারা মহানবী (সা.)-কে হত্যার উদ্দেশ্যে জাদু করেছিল।
আর মহান রাব্বুল আলামিন তাদের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য মহানবী (সা.)-কে বিশেষ সুরা শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি উষার রবের কাছে, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়, এবং (জাদু করার উদ্দেশ্যে) গিরায় ফুঁৎকারকারিণীদের অনিষ্ট থেকে, আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।’
(সুরা : ফালাক, আয়াত : ১-৫)
তা ছাড়া হিংসা-বিদ্বেষ মানুষের আমলকে ধ্বংস করে দেয়। তাই মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের হিংসুককে এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আহলে কিতাবের অনেকেই চায়, যদি তারা তোমাদের ঈমান আনার পর কাফির অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারত! সত্য স্পষ্ট হওয়ার পর তাদের পক্ষ থেকে হিংসাবশত (তারা এরূপ করে থাকে)। সুতরাং তোমরা ক্ষমা কর এবং এড়িয়ে চল, যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর নির্দেশ দেন। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’
(সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০৯)
আর আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীজি (সা.) আমাদের হিংসা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা পরস্পর বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষণ কোরো না, পরস্পর হিংসা কোরো না, একে অন্যের বিরুদ্ধাচরণ কোরো না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও। কোনো মুসলিমের জন্য তিন দিনের বেশি তার ভাইকে ত্যাগ করে থাকা বৈধ নয়।’
(বুখারি, হাদিস : ৬০৬৫)
হিংসা এমন এক পাপ যে পাপের কারণে মধ্য শাবানের বরকতময় রাতে আল্লাহর সাধারণ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত তাঁর সৃষ্টির সবাইকে ক্ষমা করেন।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৯০)
তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত এই অভিশাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
মহান আল্লাহ আমাদের হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ