মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ দিন, পবিত্র জুমার দিন। কোরআন হাদিসে এই দিনের অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই দিনকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এবং ছোট-বড় সবাই মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ জামাতে আদায় করার চেষ্টা করে।
জুমার দিন মহান আল্লাহ কল্যাণের দ্বারগুলো খুলে দেন। ছোট ছোট আমলে অনেক বড় প্রতিদান দেন। সেদিনের যেসব আমলে অফুরন্ত কল্যাণ মেলে, তন্মধ্যে অন্যতম হলো, পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
ইয়াজিদ ইবনে আবু মারইয়াম (রহ.) থেকে বর্ণিত, আবায়া ইবনে রাফি (রহ.) আমার সঙ্গে সাক্ষাত করলেন, তখন আমি জুমার নামাজ আদায়ের জন্য যাচ্ছিলাম। তিনি বলেন, সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আপনার এই পদক্ষেপ হচ্ছে আল্লাহর পথে। আমি আবু আবস (রা.)-কে বলতে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির দুই পা আল্লাহর পথে ধূলি-ধূসরিত হয়, সে জাহান্নামের জন্য হারাম হয়ে যায়।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩১১৬)
শুধু তাই নয়, মহানবী (সা.) নির্দেশনা মোতাবেক জুমার দিনের আমলগুলো করে মসজিদে রওয়ানা হলে প্রতি পদক্ষেপে এক বছর আমল করার সওয়াব লিখে দেওয়া হয়। আওস ইবনে আওস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে মাথা ও শরীর ধুয়ে উত্তম রূপে গোসল করে জুমার সময়ের প্রথম সময়েই মসজিদে যায়, কোনো বাহনে আরোহণ না করে পায়ে হেঁটেই মসজিদে যায় এবং ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসে, নিশ্চুপ হয়ে খুতবা শুনে ও কোনো অনর্থক কাজ না করে, তার জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছর আমল করার সওয়াব হবে।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১৩৮৪)
সুবহানাল্লাহ, শুধু জুমার দিনই নয়, অন্য দিনও পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। তাই কোনো কোনো সাহাবি ইচ্ছাকৃত মসজিদ দূরে বসবাস করে পায়ে হেঁটে মসজিদে আসার নজির পাওয়া যায়। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, উবাই ইবনে কাআব (রা.) বলেন, আমি জনৈক লোক সম্পর্কে জানি যার বাড়ি অপেক্ষা কারো বাড়ি মসজিদ থেকে অধিক দূরে ছিল বলে আমার জানা নেই। তিনি প্রতি ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়তেন (কখনো জামাত তরক করতেন না)। উবাই ইবনে কাআব বলেন, তাকে বলা হলো অথবা (বর্ণনাকারী আবু উসমান নাহদির সন্দেহ) আমি বললাম, যদি তুমি একটি গাধা কিনে নাও এবং তার পিঠে আরোহণ করে রাতের অন্ধকারে এবং রোদের মধ্যে নামাজ আদায় করতে আসো তাহলে তো বেশ ভালই হয়। একথা শুনে সে বলল, আমার বাড়ি মাসজিদের পাশে হোক তা আমি পছন্দ করি না। আমি চাই মাসজিদে হেঁটে আসা এবং মাসজিদে থেকে ঘরে আমার পরিবার-পরিজনের কাছে যাওয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ আমার জন্য (আমালনামায়) লিপিবদ্ধ হোক। তার এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য অনুরূপ সাওয়াবই একত্রিত করে রেখেছেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৪০০)
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ