দাউদ (আ.) ছিলেন আল্লাহর মহান একজন নবী, যিনি একই সঙ্গে একজন নবী ও শাসক ছিলেন। ঐতিহাসিকরা বলেন, তিনিই সর্বপ্রথম বনি ইসরাঈলের জন্য সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাঁকে রাজত্ব ও প্রজ্ঞা দান করেছিলেন। আর যা তিনি ইচ্ছা করলেন তা তাকে শিক্ষা দিলেন।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫১)
মূলত বনি ইসরাঈলের নেককার নেতা তালুতের মৃত্যুর পর তিনি নিজ গোত্রের শাসনভার লাভ করেন। আল্লাহর অনুগ্রহে তিনি নিজ জাতির জন্য একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য তাঁকে জাতিরাষ্ট্রের প্রবর্তকও বলা হয়। দাউদ (আ.)-এর এই রাষ্ট্রের উত্থান হয়েছিল অত্যাচারী শাসক জালুতকে হত্যার মাধ্যমে।
দাউদ (আ.) জালুতকে হত্যা করেছিলেন ফিলিস্তিনের ইলাহ বা ইল্লা ভ্যালিতে, যা বর্তমানে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের দখলে রয়েছে। ইল্লা ভ্যালির বিবরণ তাওরাত ও বাইবেলেও এসেছে। পবিত্র কোরআনে ইল্লা ভ্যালির নাম না থাকলেও দাউদ (আ.) কর্তৃক জালুতকে হত্যার বিবরণ রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তারা আল্লাহর হুকুমে তাদের পরাভূত করল; দাউদ জালুতকে হত্যা করল।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫১)
ইল্লা ভ্যালিকে ফিলিস্তিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মনে করা হয়। কেননা এখানে প্রাচীন নগরী আজিকাহ, সোকো ও আদুল্লাম অবস্থিত। ইল্লা নামটি এসেছে ‘ইলাহ’ (হিব্রু শব্দ) নামক বিশাল বৃক্ষ থেকে, যা লম্বায় ৫৫ ফুট এবং চওড়ায় ১৭ ফুট পর্যন্ত বড় হয়। প্রায় ৭৫ ফুট জায়গাজুড়ে তা ছায়া বিস্তার করে।
২০০৯ সালে ইল্লা ভ্যালির নিকটবর্তী খিরবেত কিয়াফায় দ্বিতীয় লৌহ যুগে গড়ে ওঠা একটি প্রাচীন নগরী আবিষ্কার করা হয়।
নগরীর নির্মাণ খ্রিস্টপূর্ব ১০৫০-৯১৫ অব্দ ধারণা করা হয়। ঐতিহাসিক বিবরণ অনুসারে এই সময়কালে দাউদ (আ.)-এর আবির্ভাব হয়। তাই ইল্লা বা ইলাহা ভ্যালির আশপাশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো দাউদ (আ.)-এর সময়কার বলে অনুমান করা যায়।
ইল্লা ভ্যালি ফিলিস্তিনের সবচেয়ে উর্বর জায়গাগুলোর একটি। এর সমতল ভূমি গম চাষের জন্য বিখ্যাত।
সূত্র : আতলাস ইসলামিকা ও উইকিপিডিয়া
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন