কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে দুর্গা প্রতিমা দর্শনে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা পুলিশ। মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত কয়েক মাস আগে থেকেই অসংখ্য হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গিয়েছিল শহর কলকাতর রাজপথ। বৈদ্যুতিন মাধ্যমেও চলেছিল প্রচার। ‘সত্যি! এত বড়’ এই ক্যাপশন লেখা হোর্ডিগুলিতে ব্যবহার করা হয়েছিল বিশাল দুর্গার মুখ, পা এবং হাতে ধরা ত্রিশূল। কলকাতার এবারের পুজোর সেরা আকর্ষণই ছিল দেশপ্রিয় পার্কের এত বড় প্রতিমা! কিন্তু সেই দুর্গা প্রতিমাকে ঘিরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা দেখা দিল রবিবার। হুড়োহুড়িতে আহত হলেন ১১ জন। মাথা ফাটল এক শিশুর। দুর্ঘটনার পরই স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রবিবার পঞ্চমীর দিন, তার ওপর সরকারি ছুটির দিন। এদিন দুপুর থেকেই সবচেয়ে বড় প্রতিমা দেখতে দেশপ্রিয় পার্কে ভিড় জমায় অসংখ্য দর্শনার্থী। দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হতেই একসময় জনপ্লাবনের চেহারা নেয় দেশপ্রিয় পার্ক। আর ঠিক তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। পার্কের ভিতর হাজার হাজার মানুষ। আর পার্কের বাইরে আরও কয়েক হাজার মানুষ। একসময় প্রচণ্ড ভিড়ে মানুষের হুড়োহুড়িতে ১১ জন দর্শনার্থী আহত হন, প্রতিমা দেখতে আসা একটি শিশুর মাথা ফেটে যায়।দেশপ্রিয় পার্কের এই দুর্ঘটনার রেশ পড়ে পুরো কলকাতাতেই। একাধিক জায়গায় যানজট সৃষ্টি হয়। আর নাকাল হতে হয় অসংখ্য সাধারণ মানুষ এবং প্রতিমা দর্শনার্থীকে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে ওঠে যে নিজের গাড়ি ছেড়ে মেট্রোয় চেপে এসপ্লানেড থেকে কালীঘাটে মেট্রো স্টেশনে এসে তার পায়ে হেঁটে দেশপ্রিয় পার্কে পৌঁছন কলকাতা পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থসহ পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। এরপরই বিপদের আাঁচ পেয়ে এই পুজো মণ্ডপে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা বলে কলকাতা পুলিশ। এরপর ঘটনাস্থল থেকে কমিশনার ছুটে আসেন কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে। সেখানে পুলিশের অন্যান্য শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি। শেষে স্থানীয় সময় রাত ১১ টা নাগাদ লালবাজার থেকে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারিভাবে এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে দেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ্।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে দেশপ্রিয় পার্কের পুজো মন্ডপের ভিড় সামলানোর মতো পরিকাঠামো ছিল না পুজো উদ্যোক্তাদের। এমনকি আদালতের নিয়ম মেনে তারা পুজো করেনি। যেকোন সময় বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে ওই পুজো মণ্ডপে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পুলিশের এই নিষেধাজ্ঞায় কলকাতা ও শহরতলির দর্শনার্থীরা বেশ হতাশ।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ অক্টোবর, ২০১৫/ রশিদা