২৩ নভেম্বর, ২০১৫ ১৪:২৩

বন্ধ ঘরে মিলল যুগলের পচাগলা মৃতদেহ

অনলাইন ডেস্ক

বন্ধ ঘরে মিলল যুগলের পচাগলা মৃতদেহ

দুর্গন্ধটা পাওয়া যাচ্ছিল শনিবার বিকেল থেকেই। প্রথমে বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামায়নি এলাকাবাসী। পরে গন্ধ বাড়তে থাকায় খবর যায় পুলিশে। রবিবার সকালে পুলিশ এসে উদ্ধার করে জানলার গ্রিলের সঙ্গে ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে মেঝেতে বসা অবস্থায় তরুণ-তরুণীর পচাগলা দেহ। ফ্ল্যাটটি থেকেই উদ্ধার হয় তরুণীর পোষা কুকুরছানা।

কলকাতার কেষ্টপুর তালবাগানে ওই ঘটনায় মৃতদের নাম রামমোহন দত্ত (২৭) ও শ্রুতিকা তিওয়ারি (১৮)। এলাকার এজি ১২৬ নম্বর বাড়ির পাঁচতলার ফ্ল্যাটে দেহ দু’টি মেলে। পুলিশ জেনেছে, হাওড়ার বাসিন্দা রামমোহন মাসখানেক আগে ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। 

বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক বি ঘোষ বলেন, ‘‘আমাকে বাড়িওয়ালা জানিয়েছিলেন, ছেলেটি একা থাকবেন। কোনো মেয়ের থাকার কথা ছিল না।’’ রামমোহন তাদের জানিয়েছিলেন, তিনি একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করেন।

পুলিশ জানায়, রামমোহনের বাড়ি হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর লেনে। শ্রুতিকা পাশের পাড়া বাজেশিবপুর রোডের বাসিন্দা। চাঁদনি চকে রামমোহনের চিকিৎসা সরঞ্জামের দোকান রয়েছে। শ্রুতিকা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।

পুলিশ আরও জানায়, সোমবার থেকে মেয়ের খোঁজ না পেয়ে শ্রুতিকার পরিজনেরা রামমোহনকে নিয়ে গিয়ে থানায় ডায়েরি করেন। মঙ্গলবার নিখোঁজ হয়ে যায় রামমোহনও। তার মা রুবিদেবী জানান, ছ’মাস ধরে তার ছেলের সঙ্গে শ্রুতিকার সম্পর্ক। তা নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল না। তবে গত ছ’মাস ধরে রামমোহন শ্রুতিকার বাড়িতেই প্রায় সারা দিন কাটাতেন। শুধু রাতে বাড়ি ফিরতেন। রামমোহনের বন্ধুরাও জানান, তাকে হাওড়ায় প্রায় দেখাই যেত না। কেষ্টপুরের ফ্ল্যাটের কথাও রামমোহনের পরিবার জানত না বলে জেনেছে পুলিশ।

রুবিদেবী জানান, ধার করে ছেলের দোকান করা হয়েছিল। নিখোঁজ হওয়ার আগে রামমোহন ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার টাকা তোলেন। পরিবারের অভিযোগ, সম্পর্ক হওয়ার পর থেকে শ্রুতিকা ও তার পরিবারের জন্য যথেচ্ছ খরচ করতেন রামমোহন। শ্রুতিকার বাড়ি তালাবন্ধ থাকায় কাউকে পাওয়া যায়নি। দুই তরুণ-তরুণীর মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দে ছেলেটির বাড়ির লোকেরাও।
পুলিশ জানায়, রামমোহনের বাবা ব্রজগোপাল দত্তও এ দিন বাগুইআটি থানায় রামমোহন-শ্রুতিকার সম্পর্কের কথা জানান। তালবাগানের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফ্ল্যাটে প্রায়ই মেয়েটির যাতায়াত ছিল।

রবিবার তালা ভেঙে ঢুকে পুলিশ দেহ দু’টি পায়। পুলিশ জানায়, দেহ দু’টিতে ক্ষতচিহ্ন নেই। তবে শরীরের কিছু জায়গায় রক্তের দাগ ছিল। পাশে মিলেছে পাঁচশো টাকার নোটে ৭০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও সুইসাইড নোট মেলে। পুলিশের দাবি, তাতে লেখা ছিল, ‘‘আমাদের মৃতদেহ যেন একসঙ্গে পোড়ানো হয়। এতে আমাদের আত্মা শান্তি পাবে।’’ ওই ঘর থেকে ছুরি-সহ আরও বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার হয়েছে। তবে দেহ দু’টিতে রক্তের দাগ নিয়ে কিছুটা ধন্দে রয়েছে পুলিশ। ঘটনার
তদন্ত চলছে। আনন্দবাজার পত্রিকা।


বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর