২৩ মে, ২০১৬ ১৬:৩২

মমতার মন্ত্রিসভায় নতুন মুখের সম্ভাবনা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

মমতার মন্ত্রিসভায় নতুন মুখের সম্ভাবনা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে দলের বিশাল জয়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের এই মুহূর্তে মন্ত্রিসভায় কে কে আসতে চলেছেন তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। দলীয় সূত্রে খবর, একাধিক নতুন মুখ দেখা যেতে পারে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নতুন মন্ত্রিসভায়। আগামী ২৭ মে কলকাতার রেড রোডে শপথ নেবেন মমতাসহ নতুন মন্ত্রীরা। কিন্তু মন্ত্রিসভায় কারা থাকবেন তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই।

দলীয় সূত্রে খবর, মন্ত্রিত্বের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। দলের এই লোকসভার সাংসদ এবার ৮১ হাজার ভোটে জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়েছেন। যদিও নির্বাচনের বহু আগেই মমতা শুভেন্দুকে মন্ত্রিসভায় আনার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন।

মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন মঙ্গলকোটের সদ্য বিজয়ী বিধায়ক ও জামিয়াত-এ-উলেমা-এ-হিন্দ এর শীর্ষনেতা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। তৃণমূলের টিকিটে লড়াই করে এই আসনটি ৩৯ বছর পর বামদের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। পাশাপাশি সিপিআইএম থেকে আসা তৃণমূলের জয়ী বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লার নামও শোনা যাচ্ছে। তিনদশক ধরে বামফ্রন্টের মন্ত্রী থাকা রেজ্জাক দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সিপিআইএম’থেকে বহিষ্কৃত হন দুই বছর আগে। এরপর চলতি বছরের গোড়ার দিকে তৃণমূলে নাম লেখান এবং নির্বাচনে লড়ে জয়ী হন ভাঙড় কেন্দ্র থেকে। এই দুই সংখ্যালঘু মুখকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে এসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে একটা সদর্থক বার্তা দিতে চাইছেন বলে খবর। কারণ এই নির্বাচনেই দেখা গেছে বাম-কংগ্রেস জোট কিংবা বিজেপি’র থেকে রাজ্যের ২৭ শতাংশ মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ককে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসই।

এবারের মন্ত্রিসভায় তরুণ প্রজন্মকেও জায়গা দিতে পারেন মমতা। সেক্ষেত্রে ক্রিকেটার লক্ষীরতন শুক্লাকে কোন প্রতিমন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। ক্রিকেট প্রশাসক প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে বৈশালী ডালমিয়া’র নাম শোনা যাচ্ছে।

এবারের নির্বাচনে মদন মিত্র, মণীশ গুপ্ত, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্র, শঙ্কর চৌধুরী, আবদুল করিম চৌধুরী, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, উপেন বিশ্বাস-এর মতো হেভিওয়েট মন্ত্রীরা পরাজিত হয়েছেন। নতুন মন্ত্রিসভায় তাদের সেই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব কার হাতে তুলে দেওয়া হবে তা নিয়ে মমতা নিজেও যথেষ্ট চিন্তিত।
পাশাপাশি পুরোনো মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন তাদেরও অনেককেই দ্বিতীয় মন্ত্রিসভাতে দেখা যেতে পারে। এদের মধ্যে মমতা ঘনিষ্ঠ সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার, পূর্ণেন্দু বসু, রাজীব ব্যানার্জি, মলয় ঘটক উল্লেখযোগ্য। যদিও তাদের ক্ষেত্রে অনেকেরই পুরোনো মন্ত্রণালয় পরিবর্তন হতে পারে।

তবে শপথ গ্রহণের আগে আগামী ২৫ মে দলের সাংসদ ও গুরুত্বপূর্ণ বিধায়কদের সাথে নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন মমতা। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য প্রত্যেক নেতাদের কাছে কড়া নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। আগামী দিনের কথা ভেবেই এবার জেলা ধরে ধরে মন্ত্রিসভায় যাতে প্রতিনিধি থাকেই বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করতে পারেন তৃণমূল প্রধান। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই মমতা তাঁর মন্ত্রিসভা সাজানোর চিন্তাভাবনা করছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে এবার যাতে দলের ভিতরে কোনরকম ক্ষোভ না থাকে সেদিকেও নজর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বিডি-প্রতিদিন/২৩ মে, ২০১৬/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর