২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:৪২

টোল প্লাজায় সেনার উপস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

টোল প্লাজায় সেনার উপস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার

মমতা ব্যানার্জি

পশ্চিমবঙ্গের দুই নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ডানকুনি ও পালসিটের টোল প্লাজায় সেনা মোতায়েন নিয়ে এবার কেন্দ্রকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 

বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন থেকে সংবাদ সম্মেলন করে মমতা ব্যানার্জি বলেন, "আমি জানতে চাই যে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার পাশাপাশি কি গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপরও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে? এটা অভূতপূর্ব, অত্যন্ত উদ্বেগজনক ব্যাপার। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে কেন এই দুইটি টোল প্লাজায় সেনা নামানো হয়েছে?" 

তিনি আরও বলেন, "নবান্ন একটা অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকায়। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সেনাকে সরে যাওয়ার কথা বললেও সেনা এখনও সরেনি। কিন্তু আমি তো আমার সচিবালয় ছেড়ে দিতে পারিনা। এটা আমার গণতান্ত্রিক সরকার। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে সেনা যতক্ষণ না সরছে আমি এখানে রাতে থাকবো।" 

এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, "চাইলে আপনারা এখানে থাকতে পারেন। আমি মহারাষ্ট্র, ওড়িষ্যা, ছত্রিশগড় থেকে খবর নিয়েছি কিন্তু সেখানে এমন জিনিস হয় নি, আমি মানুষের সঙ্গে কথা বলছি বলেই কি এখানে এটা হচ্ছে? এ রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটছে?" এ সময় সেনার বিরুদ্ধে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য গত দুই দিন ধরেই এই দুইটি প্লাজায় সেনা নামে। এখান দিয়ে যত ট্রাক আসা-যাওয়া করছে, সেসব ট্রাক দাঁড় করিয়ে তার নম্বর লেখা হচ্ছে, তারপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। টোল প্লাজার ম্যানেজার জানিয়েছেন নম্বর জরিপের কাজ করছে। বিষয়টি নজরে পড়তেই বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। 

মমতা ব্যানার্জি বলেন, "গণতন্ত্রকে সিজ করে, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে স্তব্ধ করে দিয়ে এখানেও সংবিধান সঙ্কটে ফেলে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তা না হলে এসব জিনিস কিভাবে হতে পারে। রাজনৈতিক উদ্যেশ্য চরিতার্থ করতেই রাজ্যকে না জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী আমাদের বিদেশের শত্রুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে, তাদের কোন রাজনৈতিক উদ্যেশ্য চরিতার্থ করতে এইভাবে কাজে লাগিয়েছে।"

তবে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে তারা সেনাকে তলব করেনি। অন্যদিকে সেনার তরফ থেকে জানানো হয়েছে আপাৎকালীন পরিস্থতিতে তৈরি হলে কত পণ্য পরিবহনকারী গাড়ি মিলতে পারে তা দেখতেই সরকারের নির্দেশানুসারে এই জরিপ করা হয়। 

সেনার পূর্বাঞ্চলীয় শাখার মুখপাত্র এস.এস.বরদি জানান, "বছরে দুই বার দেশের সর্বত্র লোড ক্যারিং ক্যাপাসিটির ব্যাপারে তথ্য পরিসংখ্যান সংগ্রহের জন্য অভিযান চালানো হয়। জেলাশাসক ও পুলিশকে এই অভিযানের বিষয়ের ব্যাপারে প্রাথমিক তথ্য দেওয়া হয়। আপাৎকালীন অবস্থায় সেনার যদি গাড়ির দরকার হয় সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এই এলাকায় কতগুলি গাড়ি পাওযা যেতে পারে তারই তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।"

 

বিডি-প্রতিদিন/২ ডিসেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-২ 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর