এবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে হানা দিল র্যানসমওয়্যার ভাইরাস। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বিদ্যুতের একাধিক সাব স্টেশনে হানা দিয়েছে এই ভাইরাস। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর মূলত পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা, দাঁতন, কেশিয়ারি, নারায়ণগড় ব্লকে বিদ্যুৎ দফতরের যে সাবস্টেশন রয়েছে সেখানেই হানা দিয়েছে হ্যাকাররা। স্বাভাবিক ভাবেই জেলার বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরে কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। কোন কম্পিউটারেই এখন কাজ করা যাচ্ছে না।
বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্মী জানান গত দুই-তিনদিন ধরেই তাদের কম্পিউটারগুলোতে মেসেজ আসছিল। কিন্তু বিষয়টিতে তারা অতটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু সোমবারই ইন্টারনেটে যুক্ত কম্পিউটারগুলো আর খুলছে না। হ্যাকাররা সমস্ত নথি তাদের নিজেদের আয়ত্তে নিয়েছে বলে অভিযোগ। পুরো বিষয়টি বিদ্যুৎ দফতরে জানানো হয়েছে। কীভাবে এই সাইবার হামলার থেকে বাঁচা যায় সে বিষয়েও সাইবার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বিদ্যুৎ দফতর।
র্যানসমওয়্যার নামে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭৫ হাজার কম্পিউটারের দখল নিয়েছে হ্যাকাররা। চাকরির অফার, লাকি ড্রয়ের পুরস্কার, ইনভয়েস, সিকিউরিটি ওয়ার্নিং বা জরুরি তথ্যের আদলে ম্যালওয়ার পাঠিয়ে হ্যাকাররা সিস্টেম হ্যাক করেছে বলে অভিযোগ।
সিস্টেম খোলার জন্য হ্যাকাররা ৩০০ থেকে ৬০০ মার্কিন ডলার বিটকন মুক্তিপণও দাবি করেছে বলে অভিযোগ। সাইবার ক্রাইমের শিকার ওই কম্পিউটারের স্ক্রিনেই মুক্তিপণের অর্থ জানিয়ে দিচ্ছে হ্যাকাররা। মুক্তিপণের পুরো অঙ্ক ডিজিটাল মুদ্রা বিটকনের মাধ্যমে দিতে বলা হয়েছে। মুক্তিপণের রুপি না মেটালে কম্পিউটার থেকে সমস্ত তথ্য উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সাম্প্রতিকালে অন্যতম বড় সাইবার অ্যাটাকে আক্রান্ত বিশ্ব। শুক্রবার রাতে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সহ গোটা বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে সাইবার হানা চালায় একদল হ্যাকার। এবার সেই হামলা পশ্চিমবঙ্গেও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন মুক্তিপণের অর্থ নেওয়ার জন্য ক্রিপটোকারেন্সি (ইন্টারনেটে পেমেন্ট নেওয়ার জন্য এক ধরনের মুদ্রা) ‘বিটকয়েন’ ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে কে বা কারা এর পিছনে রয়েছে তা বোঝা না যায়। সবটাই ঘটছে ইমেলের মাধ্যমে। অজানা কোন সূত্র থেকে ইমেল আসছে। আর তাতেই থাকছে লোভনীয় সব প্রস্তাব।
এদিকে বিশ্বজুড়ে যে সাইবার হামলা চলছে তার হাত থেকে বাঁচতে ভারতের প্রতিটি ব্যাঙ্ককে সতর্ক করল দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। যে কোনও ব্যাঙ্কের এটিএম নেটওয়ার্ক খোলার আগে উইনডোজ সিস্টেম আপডেট করার নির্দেশ দিল আরবিআই। আরবিআই’এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দেশের প্রতিটি এটিএমই উইনডোজ সফটওয়্যার নির্ভর। কিন্তু ২.২৫ লাখের মধ্যে দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ এটিএমই এখনও পুরোনো ভার্সনে(উইনডোজ এক্স পি) চলে। ফলে ওই এটিএম গুলি সাইবার হামলার মুখে পড়তে পারে।