৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৮:৪৩

স্কুলে ঢুকতে বাধা রূপা গাঙ্গুলী ও সৌমিত্র রায়কে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

স্কুলে ঢুকতে বাধা রূপা গাঙ্গুলী ও সৌমিত্র রায়কে

শিশু নিগ্রহের ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার সকালে ও বিকালে কলকাতার দুইটি স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল বিজেপি সাংসদ রূপা গাঙ্গুলী এবং তৃণমূল নেতা ও গায়ক সৌমিত্র রায়কে।
এদিন সকালে জি.ডি.বিড়লায় বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপি সাংসদ রূপা গাঙ্গুলী। এদিন সকালে স্কুল খোলা ও প্রিন্সিপালের অপসারণ ও তাকে আটকের দাবিতে স্কুলেরই বাইরে শিক্ষার্থীদের অভিভাকরা যখন আন্দোলন করছিলেন ঠিক তখনই স্কুলের মূল ফটক দিয়ে ভিতরে ঢুকতে যান রূপা গাঙ্গুলী। এসময় রূপাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবকদের একাংশ। অভিভাবকদের দাবি, শিক্ষাঙ্গণে রাজনীতি চান না তারা। তাই কোন রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে রাজি নন তারা। বিক্ষোভের মুখে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা চালাতে থাকেন রূপা।
একসময় পুলিশি বাধা পেরিয়েই মূল ফটক দিয়ে ভিতরে ঢোকার মুখে তার বাম হাত আটকে যায়। রূপাও বাইরে থেকেই পুলিশ কর্মী ও অভিভাবকদের উদ্যেশ্যে বাম হাত আটকে আছে বলে চিৎকার করতে থাকেন। একসময় রূপা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন ‘আমি ভদ্রলোকের মেয়ে, আমি কথা দিচ্ছি ঢুকবো না... আমি ঢুকবো না কিন্তু আপনারা এভাবে আমাকে আটকাতে পারেন না। দরজা খুলুন, আমাকে বের হতে দিন’। বিজেপি সাংসদ এও জানান যে এটি তার ছোট বেলার পাড়া বলেই তিনি এখানে এসেছেন কিন্তু এর সঙ্গে রাজনীতির কোন সম্পৃক্ততা নেই। তবে রূপার আর্জি মেনে স্কুলের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় নি।
অন্যদিকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠা কলকাতার আরেক স্কুল এমপি বিড়লাতে ঢুকতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন সৌমিত্র রায়। গত সেপ্টেম্বর মাসে এই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল মনোজ নামে স্কুলেরই গ্রুপ ডি কর্মীর বিরুদ্ধে। সেসময় তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও তাকে আটক করা হয় নি। এরপর সোমবার সকাল থেকে অভিভাবকরা স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। অবশেষে চাপে পড়েই এদিন দুপুরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ওই কর্মীকে বরখাস্ত করে। যদিও অভিভাবকদের দাবি মনোজকে শিগগিরি আটক করা হোক। বিক্ষোভের মাঝেই এদিন বিকালের দিকে শিশু অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য হিসাবে সৌমিত্র রায় ওই স্কুল যান। সেসময়ই তাকে ঘিরে ধরে অভিভাবকরা দাবি জানাতে থাকেন এখনি মনোজকে আটক করতে হবে। যদিও সৌমিত্র রায় অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে অভিভাবকরা শান্ত না হওয়ায় একসময় গাড়িতে করে ওই জায়গা ছাড়তে বাধ্য হন সৌমিত্র রায়। সব মিলিয়ে এই দুই স্কুলে শিশু যৌন নির্যাতনের ঘটনায় উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি।
এদিন বিকালেই জিডি বিড়লা স্কুলে শিশুর ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বললেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জি। এদিন রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যালয় নবান্নে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার নিন্দা করেন। যদিও দুই একজন শিক্ষকের জন্য সমস্ত শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর