১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৬:২৫

এবার হিন্দু তীর্থযাত্রীদের জন্যও জীবনবিমা মমতার!

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

এবার হিন্দু তীর্থযাত্রীদের জন্যও জীবনবিমা মমতার!

কথায় আছ ভোট বড় বালাই! আগামী বছরের শুরুর দিকে রাজ্যটিতে পঞ্চায়েত ভোট। আর সে কথা মাথায় রেখেই এবার হিন্দু ভোটারদের কাছে টানতে মাস্টার স্ট্রোক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলায় অংশগ্রহণকারী হিন্দু তীর্থযাত্রীদের প্রত্যেককেই জীবনবিমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। রাজনৈতিক মহলের অভিমত এই সিদ্ধান্তের ফলে মমতার বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণ নীতির যে অভিযোগ এতদিন বিজেপি, কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি করে আসছিল এবার তার জবাব দেওয়া যাবে।
গত শুক্রবারই রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বসে। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন যে আগামী বছর গঙ্গাসাগর মেলায় প্রত্যেক তীর্থযাত্রীদের ৫ লাখ রুপি করে ব্যক্তিগত জীবনবিমা করে দেওয়া হবে। বিমার পুরো অর্থই বহন করবে রাজ্য সরকার।
এর আগে হজ করতে গিয়ে নিহত হাজীদের পরিবার পিছু ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছিল মমতার সরকার। ২০১৫ সালে মক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় রাজ্যের একজন হজযাত্রী নিহত হয়, আহত হয় দুই জন। তার পরই নিহত হজযাত্রীদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ এবং আহতদের প্রত্যেককে ১ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেন মমতা। ওই সিদ্ধান্তের পরই মমতার বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণ নীতির অভিযোগ তোলে বিজেপি। বিরোধীদের সেই অভিযোগের যোগ্য জবাব দিতেই এবার হিন্দুদের দিকে নজর ঘোরালেন মমতা।
নবান্নের বৈঠকে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান ‘এর আগে রাজ্যের কোন সরকারই মেলায় অংশগ্রহণ করতে যাওয়া তীর্থযাত্রীদের জন্য এত বিপুল অর্থের ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেয়নি। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর আমাদের সরকার প্রথম পর্যটন কর তুলে দেয়, যেটা বিগত বাম সরকারের আমলে ছিল। আর এখন হিন্দু তীর্থ যাত্রীদের বিমার জন্য এত বড় অর্থের ঘোষনা দেওয়া হল’।
মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে প্রতি বছর গড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ তীর্থযাত্রী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার গঙ্গাসাগরের মেলায় উপস্থিত থাকেন। এবারে জানুয়ারী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বসছে গঙ্গাসাগরের মেলা।
মেলা উপলক্ষ্যে বোট ডুবে যাওয়া, আগুন, ঠান্ডা, পদদলিত হওয়ার মতো ছোট খাটো দুর্ঘটনা হয়েই থাকে। চলতি বছরের শুরুর দিকেও গঙ্গাসাগরের মেলায় একটি দুর্ঘটনায় ছয়জন তীর্থযাত্রী নিহত হন। ওই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে বাক যুদ্ধ শুরু হয়। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার ওই ঘটনাকে পদদলনের ঘটনা বললেও পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের তরফে বলা হয় প্রচন্ড ঠান্ডা ও বয়সজনিত কারণেই তীর্থযাত্রীরা প্রাণ হারান। দুই পক্ষের বাদানুবাদ চরমে ওঠায় শেষপর্যন্ত নিহতদের পরিবারপিছু ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেয় কেন্দ্রের মোদি সরকার। এরপরই ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপ’ বলে কেন্দ্রকে তোপ দাগেন মমতা।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর