৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১০:২৬

কিডনি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ, কলকাতায় বাংলাদেশি যুবক আটক

কলকাতা প্রতিনিধি:

কিডনি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ, কলকাতায় বাংলাদেশি যুবক আটক

গ্রামের এক প্রতিবেশিকে কিডনি দিয়ে সাহায্য করতে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় এসে অসহায় পরিবারের অর্থ চুরির অভিযোগে আইনুর হক (২৯) নামে এক যুবককে আটক করেছে কলকাতা পুলিশ। রবিবার বিকালে বনগাঁ থানার রামনগর থেকে আইনুর’এর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই তাকে আটক করে বনগাঁ থানার পুলিশ। 

জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরেই কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা তারিক হাসান (২২)। চিকিৎসকের পরামর্শে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দক্ষিণ কলকাতার ইএমবাইপাশের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইন্সিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেস বা আরটিটিআইসিএস) ভর্তি হন তিনি। 

এদিকে তারিককে কিডনি দান করতে গত ১৭ জানুয়ারী বাংলাদেশের নওগাঁ থেকে আইনুর হক (২৯) নামে এক পরিচিত ব্যক্তিকে কলকাতায় নিয়ে আসেন তারিকের পরিবার। হাসপাতালের পাশেই একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তারিকের পরিবারের সাথেই অবস্থান করছিলেন আইনুর হক। এরই মধ্যে তারিকের কিডনি প্রতিস্থাপনের যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চলছিল। 

গত ৩ ফেব্রুয়ারী সকালে ঘুম থেকে উঠে তারিকের বাবা মহম্মদ লুৎফর রহমান লক্ষ্য করেন ভাড়া করা বাসায় রাখা ছেলের চিকিৎসা, বাসা ভাড়া বাবদ বাংলাদেশি ও ভারতীয় অর্থ, ডলার, মোবাইলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না দেশের গ্রাম থেকে নিয়ে আসা আইনুর হক-কেও। তাতেই সন্দেহ হয় লুৎফর রহমানের। এরপরই স্থানীয় পূর্ব যাদবপুর থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। 

অভিযোগ পেয়ে পূর্ব যাদবপুর থানা তদন্তে নামে। আইনুর হক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে যেতে পারে এই আশঙ্কায় সীমান্তবর্তী থানাগুলিতেও সতর্ক করে দেওয়া হয়। অবশেষে রবিবার বিকালের দিকে বনগাঁ থানার রামনগর থেকে আইনুর’এর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই তাকে আটক করে বনগাঁ থানার পুলিশ। আইনুরের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় তারিক হাসানের চুরি যাওয়া অর্থ ও মোবাইল ফোন। আইনুরকে সহয়তা করার অভিযোগ স্মরজিৎ দাস নামে পেট্রাপোলের বাসিন্দা এক ভারতীয়কেও আটক করা হয়েছে। 

জিজ্ঞাসাবাদে আইনুর হক জানান তাকে বাংলাদেশ থেকে কিডনি দেবার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। এজন্য তাকে ৩ লাখ ৫০ হাজার রুপি দেওয়ার কথা ছিল। বাড়িতে অর্থাভাবের কারণেই সে কিডনি দিতে রাজি হয়। কিন্তু কলকাতায় নিয়ে এসে তাকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হচ্ছিল না, তাছাড়া কিডনি দেওয়ার পরে প্রতিশ্রুতি মতো অর্থ দেওয়া হবে কি না সেই সন্দেহের বশেই সবকিছু নিয়ে চম্পট দেয় আইনুর। 

তারিক হাসানের পিতা লুৎফর অভিযোগ করে বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে আইনুর পালিয়ে য়ায়। পরদিন সকালে আমি বিষয়টি জানতে পেরেই থানায় অভিযোগ জানাই। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে নিয়মিত খাবার না দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করেন। তিনি আরও জানান কিডনি দানের পরিবর্তে কোন টাকা দেবার কথা ছিল না। 


বিডি প্রতিদিন/৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর