১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ২২:২১

কলকাতায় প্রকাশ্যে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

কলকাতায় প্রকাশ্যে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ

খোদ কলকাতায় ধর্মান্তকরণের অভিযোগ। বুধবার কলকাতার ধর্মতলায় রাণি রাশমণি রোডে হিন্দু সংহতি মঞ্চ’এর সভা থেকে প্রকাশ্যে কয়েকজন মুসলিমকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তকরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
হিন্দু সংহতি মঞ্চ’এর ১০ প্রতিষ্ঠা বার্ষির্কী উপলক্ষ্যে এদিন বিকালে ওই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে একটি প্রকাশ্য জনসভার আয়োজন করা হয়। মঞ্চে হিন্দু সংহতি মঞ্চ’এর প্রতিষ্ঠাতা ও আহ্বায়ক তপন ঘোষ ছাড়াও ওই সংগঠনটির অন্য নেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন হোসেন আলি নামে এক মুসলিম পরিবারের ১৪ জন সদস্য। সেই মঞ্চ থেকে তপন ঘোষ নিজেই ঘোষণা দেন ঐ সংখ্যালঘু পরিবারটি ধর্মান্তরিত হয়েছে।
এই ঘোষণার কিছু পরেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ওই সংখ্যালঘু পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চান। মুসলিম পরিবারের ওই সদস্যরা স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছে কি না বা তাদের পরিচয় কি-সেটা জানাই প্রধান উদ্যেশ্য ছিল গণমাধ্যম কর্মীদের। আর তাতেই হিন্দু সংহতির মঞ্চ’এর কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। তাদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। সাংবাদিকদের মারধর করার পাশাপাশি তাদের ক্যামেরাও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। মঞ্চের নিচে দলের একদল উন্মত্ত কর্মী-সমর্থকদের হাতে সাংবাদিকদের এই লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও তা থামাতে কোন উদ্যোগই নেননি দলের শীর্ষ নেতা তপন ঘোষ। অভিযোগ তপন ঘোষের প্ররোচনামূলক বক্তব্যের পরই সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়।
সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় তপন ঘোষ সহ সংগঠনটির চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও গ্রেফতার হওয়ার আগেই এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তপন ঘোষ বলেন ‘আমি খুবই দু:খিত যে একটা অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় সাংবাদিক বন্ধুদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি’।
এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।  
আলাদা করে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন কবি সুবোধ সরকার, সিপিআইএম সাংসদ মুহাম্মদ সেলিম, পশ্চিমবঙ্গের নগরায়ণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সিপিআইএম এমএলএ সুজন চক্রবর্তী, নাট্যকার ও সাংসদ অর্পিতা ঘোষ সহ বিশিষ্টরা।

সাংবাদিক পেটানোর ঘটনাকে নিন্দা জানিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)’এর পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসুও সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন যদিও ধর্মান্তকরণের ঘটনাকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন ওই ধর্মান্তকরণ আইন মেনে হচ্ছিল কি না-শুধু তা দেখতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গে ইসলামিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের একত্রিত করতেই ২০০৮ সালে এই অ-রাজনৈতিক সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা করা হয়।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর