২২ এপ্রিল, ২০১৮ ০৯:২২

পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশি অন্তঃসত্ত্বাকে হেনস্থার অভিযোগ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশি অন্তঃসত্ত্বাকে হেনস্থার অভিযোগ

এক বাংলাদেশি অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ভারতের পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক সীমান্তের অভিবাসন দফতরের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। টানা প্রায় ৫ ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে হেনস্থার ফলে ওই নারী একসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর প্রথমে তাঁকে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ হাসপাতালে পরে অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার আর. জি. কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। 

বনগাঁ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অর্পিতা পাল নামে ওই অন্তঃসত্ত্বা নারী বর্তমানে বালিগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শনিবার সকালের দিকে পেট্রাপোল সীমান্তের অভিবাসন দফতরে একটানা দাঁড়িয়ে থাকার ফলে তাঁর রক্তপাত হতে শুরু করে। খবর পেয়ে পেট্রাপোল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিদ্ধার্থ মন্ডল ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে বনগাঁ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। কিন্তু পরে অর্পিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতা আর. জি. কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। 

জানা গেছে, অর্পিতা পাল বাংলাদেশের বাসিন্দা। গত আট মাস আগে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জের বাসিন্দা আনন্দ দাসগুপ্তের সঙ্গে বিবাহ হয়। গত ১০ এপ্রিল বিমানে করে অর্পিতাকে নিয়ে বাংলাদেশে বেড়াতে যান আনন্দ। শনিবার সকালে বাংলাদেশ থেকে হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফিরে আসেন। এসময় পেট্রাপোল অভিবাসন দফতরে স্বামীর সাথেই পাসপোর্ট চেকিং’এর জন্য দাঁড়ান অর্পিতা। তাঁর পাসপোর্টটি পরীক্ষা করে দেখেন স্বপন দফাদার নামে এক অভিবাসন কর্মকর্তা। 

দেখা যায় আনন্দ দাসগুপ্তের পাসপোর্ট ভারতীয় হলেও, অর্পিতার পাসপোর্টটি বাংলাদেশের। কারণ কয়েক মাস আগে আনন্দ-অর্পিতার বিয়ে হলেও অর্পিতার নিজের বাংলাদেশি পাসপোর্টটি এখনও ভারতীয় হিসাবে পরিবর্তন করেন নি, এমনকি স্বামীর দেওয়া পদবীও গ্রহণ করেন নি অর্পিতা। স্বভাবতই স্বামী ও স্ত্রী’এর আলাদা দুইটি দেশের পাসপোর্ট, পদবী দেখেই সন্দেহ হয় অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তাদের। এরপরই আটকে রাখা হয় অর্পিতাকে, চলে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। 

এমনকি অর্পিতার পাসপোর্টটি ইচ্ছা করে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে ওই অভিবাসন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা আনন্দ দাস সমস্ত ঘটনা জানালেও তাতে শান্ত হননি ওই কর্মকর্তা। একসময় স্ত্রীকে ছেড়ে আনন্দ দাসগুপ্তকে চলে যেতে বলেন অভিযুক্ত ওই অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তা। প্রায় ৫ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার ফলে অর্পিতা একসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই ঘটনার পরই অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পেট্রাপোল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আনন্দ দাসগুপ্ত। পরে পুলিশের সহায়তায় অর্পিতাকে বনগাঁ মহুকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতীয় নাগরিক আনন্দ দাসগুপ্ত অভিযোগ বলেন, ‘রুপির জন্য অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তারা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি নারী যাত্রীদেরও রেহাই দেওয়া হয় না’। 

তিনি আরো বলেন ‘এর আগে বাংলাদেশ থেকে ঘুরে গেলেও এদিনের মতো অভিজ্ঞতা আর কখনও হয়নি। এদিন স্বপন দফাদার নামে এক কর্মকর্তা এসে আমার স্ত্রী’র পাসপোর্টটি নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আমার স্ত্রী’র বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে স্ত্রীকে ছেড়ে আমাকে চলে যাওয়ার কথা বলেন ওই কর্মকর্তা’। তাঁর প্রশ্ন ‘সেটা কি কখনও সম্ভব?

 

বিডি প্রতিদিন/২২ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর