২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ১৩:২২

ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশি অর্পিতার পরিবারের চিঠি

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশি অর্পিতার পরিবারের চিঠি

পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক অন্তঃসত্ত্বা অর্পিতা পালের হেনস্থার ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হলেন তার শ্বশুর গৌতম দাসগুপ্ত। ন্যায়বিচারের দাবিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকেও টুইট করা হয়েছে অর্পিতার পরিবারের পক্ষ থেকে।

অর্পিতা পালকে হেনস্থার ঘটনাটি সামনে আসার পর শোরগোল পড়ে গেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পেট্রাপোল থানা।

অর্পিতা পালের সাথে অমানবিক আচরণের জন্য ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও)-ও নড়েচড়ে বসেছে। সমস্ত অভিযোগই খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে তারা। অর্পিতাকে কেন ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা দেয়া হচ্ছিল, অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তারা আদৌ কোন ঘুষ দাবি করেছিলেন কি না- সব খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই এফআরআরও’এর তরফে অর্পিতার স্বামী আনন্দ দাশগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

কলকাতার বালিগঞ্জের বাসিন্দা আনন্দ ভারতের নাগরিক। তিনি জানান, আমি এফআরআরও কর্মকর্তাকে পরিস্কার জানাই যে গত ২৩ মার্চ আমরা বাংলাদেশে যাই, তখন স্ত্রী’র পাসপোর্টে কোন সমস্যা ছিল না। তবে অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তারা কি করে বলেন যে বাসে আসার ফলে আমাদের পাসপোর্টটি নষ্ট হয়েছে। আমি তাকে বললাম যে অ্যাডেসিভ টেপ দিয়ে পাসপোর্টের পাতাগুলিকে আটকানো হয়েছে।

আনন্দ আরও জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শনিবারের পর থেকে আমার প্রচণ্ড মানসিক চাপের কারণে সেসময় তার সঙ্গে দেখা করা হয়নি। কিন্তু আমি তাকে বলেছি যে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কেমন অভব্য আচরণ করা হয়েছিল। রক্তক্ষরণের ফলে আমার স্ত্রী মারাও যেতে পারতো।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন অর্পিতা পাল। সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী ভারতীয় নাগরিক আনন্দ দাশগুপ্ত। পেট্রাপোল সীমান্তের অভিবাসন দফতরে পাসপোর্ট পরীক্ষার সময় অর্পিতার পাসপোর্টের দুই-একটি পৃষ্ঠা আংশিক ছেঁড়া দেখেই তাকে জেরা শুরু করেন অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি স্বামীর ভারতীয় পাসপোর্ট হলেও অর্পিতার বাংলাদেশি পাসপোর্টের কারণ জানতে চান তারা। একসময় জেরার নামে তাকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ করেন ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অর্পিতা। এমনকি প্রচণ্ড গরমের মধ্যে প্রায় ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এসময় তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

অর্পিতা ও তার স্বামী অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তাদের শারীরিক অবস্থার কথা জানালেও তারা কর্ণপাত করেননি। অবশেষে আনন্দ দাশগুপ্ত পেট্রাপোল থানার সঙ্গে যোগাযোগ করলে পুলিশের সহায়তায় অর্পিতাকে স্থানীয় বঁনগা মহুকুমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। এরপর তারা কলকাতায় ফিরে আসেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, অর্পিতার শারীরিক অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। 
তার স্বামী আনন্দ জানান, স্ত্রীর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে তাকে আল্ট্রাসোনগ্রাফি (ইউএসজি) করাতে নিয়ে যেতে পারিনি। চিকিৎসকরা তার পালস রেট খুঁজে পেয়েছে ঠিক কথা কিন্তু তার ভ্রুণের সঠিক অবস্থান কেমন আছে সেটা বলা যাচ্ছে না।

বিডি প্রতিদিন/২৪ এপ্রিল, ২০১৮/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর