২৬ এপ্রিল, ২০১৮ ২১:২৫

মরা পশুর মাংস যেত কলকাতাবাসীর পেটে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

মরা পশুর মাংস যেত কলকাতাবাসীর পেটে

ভাগাড় থেকে মরা পশুর মাংস সোজা চলে আসত শহরের কোল্ড স্টোরে। এরপর সেই মাংস কেটে প্রথমে প্রক্রিয়াকরণ করা হত। তারপর প্যাকেটবন্দি হয়ে থেকে যেত সেই কোল্ড স্টোরেই। এরপর ওই পচা মাংসের সাথে ভাল মাংস মিশিয়ে প্রয়োজন মতো সেই প্যাকেটজাত মাংস রপ্তানি হত কলকাতা শহরের বিভিন্ন হোটেলে। দুই-একদিন নয়, দিনের পর দিন এভাবেই মরা পশুর মাংস শহরের রেস্তোরা, হোটেলগুলিতে পরিবেশন হয়ে আসছে। যা শুনে রীতিমতো তাজ্জব পুলিশের কর্মকর্তারাও।
বৃহস্পতিবারই কলকাতার নারকেলডাঙ্গা এলাকার একটি হিমঘরে অভিযান চালিয়ে প্রায় বিশ টন ওজনের এক হাজারটি প্যাকেটজাত মাংস উদ্ধার করা হয়েছে-যার সবটাই মরা পশুর মাংস বলে জানা গেছে। যেগুলি কলকাতা সহ পাশ্ববর্তী হোটেলে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত ছিল।
সপ্তাহ খানেক আগেই পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার একটি ভাগাড় থেকে মরা পশুর মাংস পাচারের ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাদেরকে জেরা করেই বড় চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। বিহারের নওদা থেকে আটক করা হয় এই চক্রের মূল হোতা সানি মালিক সহ ছয় জনকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতার রাজাবাজারের হিন্দুস্থান আইস এন্ড কোল্ড স্টোরের (হিমঘর) হদিশ পায় পুলিশ। এদিন সেখানে অভিযান চালিয়ে কয়েক টন মাংস উদ্ধার করা হয়েছে।  রাজাবাজারের পাশাপাশি কলকাতার ট্যাংরা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সোনারপুর, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার কাঁকিনাড়া, জগদ্দল সহ আরও কয়েকটি জায়গাতেও অভিযান চালায় পুলিশ। শহরের আর কোন হিমঘরে এইভাবে পচা মাংস প্যাকেটজাত করে রাখা হত তারও খোঁজ চলছে।
এদিন সংবাদ সম্মেলন করে ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও জানান ‘গত শুক্রবার বজবজের ভাগাড় থেকে দুই 'জনকে আটক করা হয়েছিল। তাদের জেরা করেই এই অসাধু চক্রের মূল হোতা সানি মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর কলকাতা পুলিশ ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বিহারের নওদা থেকে আটক করা হয় সানিকে। তাকে জেরা করেই এই হিমঘরের খোঁজ পাওয়া যায়। এখান থেকে উদ্ধার হয়েছে ২০ টন প্যাকেটজাত মাংস। মাংস উদ্ধারের পর ওই হিমঘরটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে’।
উদ্ধার হওয়া মাংসগুলি মরা পশুর কিনা তা জানতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে প্রক্রিয়াকরণের জন্য কী রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়েছে তাও জানার চেষ্টা চলছে।  

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর