প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। মমতা ব্যানার্জির পরে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাট সামলাবেন কে বা দলের হাল ধরবেন কে? অবশেষে মিলল সেই আভাস। কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই। মমতার পর দলের ভবিষ্যতের ব্যাটন উঠতে চলেছে তাঁরই ভাইপো দলের সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির হাতেই। এমনটাই ইঙ্গিতই দিলেন দলেরই দুই সিনিয়র নেতা সুব্রত বক্সি ও পার্থ চট্রোপাধ্যায়।
গতকাল মঙ্গলবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সরিষায় অভিষেকের সংসদ তহবিলের খরচ সংবলিত বই ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান থেকেই দলের পরবর্তী ‘মুখ’ হিসেবে অভিষেকের নাম ঘোষণা। সাংসদ হিসেবে অভিষেকের রিপোর্ট কার্ড ডায়মন্ড হারবারের মানুষের সামনে তুলে ধরতে গিয়েই পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, ‘একদিন আমরা থাকবো না, মমতাও থাকবেন না, কিন্তু মমতা একা লড়ে পথ দেখিয়েছেন, আর অভিষেক ছোটবেলা থেকে দেখে তা শিখে নিয়েছেন। অভিষেক সারা বাংলার প্রতীক। নেতাই তৈরি করবে তাঁর নতুন টিম’।
পার্থ চ্যাটার্জির এই মন্তব্যের পরই পরিষ্কার হয়ে যায় মমতার পর কে দলের রাশ ধরবে? সেক্ষেত্রে মমতার পর রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার রাস্তাও পরিষ্কার। অভিষেককে সমর্থনের সুর ছিল অন্যান্য নেতাদের গলাতেও। আসলে তৃণমূলের একাংশও প্রায় ধরেই নিয়েছেন যে মমতাই ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন। আর সেই জল্পনা উস্কে দিয়ে রাজ্যটির সাবেক মন্ত্রী মদন মিত্রের বক্তব্য, ‘অভিষেক ওঁর ভালবাসা দিয়ে আমায় কিনে নিয়েছে। আগামী দিনে দিল্লি শাসন করবেন মমতা আর রাজ্যের দায়িত্বে থাকবেন অভিষেক’।পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সোনালী গুহ’এর অভিমত ‘আগে আমরা ভাবতাম দিদি দিল্লি গেলে বাংলা কে দেখবে। কিন্তু এখন জানি বাংলা সামলাবে অভিষেক’।
গত মাসেই কলকাতার একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জি নিজেও জানিয়েছিলেন যে তাঁকে হত্যা করে তৃণমূলকে শেষ করা যাবে না কারণ তৃণমূলের রাজনৈতিক উইল তৈরি করা হয়ে গেছে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান জানান, ‘আমার অবর্তমানে আমার দলকে কে চালাবে বা সরকার কে চালাবে সেটাও আমার লেখা আছে। আমি রাজনৈতিক উইল করে গেছি। তাই কেউ যেন এমনটা না ভাবে যে মমতা ব্যানার্জিকে শেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটাকে শেষ করা যাবে’।
যদিও রাজ্যের মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তা হল তৃণমূলে কি অভিষেকের থেকে যোগ্য, অভিজ্ঞ বা পারদর্শী বা স্বচ্ছ কোন নেতা-নেত্রী নেই?
বিডি-প্রতিদিন/০৬ জুন, ২০১৮/মাহবুব