১৩ জুন, ২০১৮ ১৬:১১

‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রাপ্ত ড. অমিয় চৌধুরী আর নেই

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রাপ্ত ড. অমিয় চৌধুরী আর নেই

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্তিম বন্ধু, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক এবং কলকাতার সাপ্তাহিক আলিপুর বার্তার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. অমিয় চৌধুরী আর নেই। 

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিট নাগাদ কলকাতার ই.এম,বাইপাস সংলগ্ন রুবি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে পারিবারিক সূত্রের খবর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। অমিয় চৌধুরীর মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান পশ্চিমবঙ্গের আবাসন, ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
 
ড. অমিয় চৌধুরীর পারিবারিক বন্ধু প্রিয়ম গুহ জানান ‘গত অক্টোবর মাস থেকেই অমিয় বাবু শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪ টা নাগাদ তাঁকে রুবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর গতকাল সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিট নাগাদ তিনি প্রয়াত হন’। 

রাতেই তাঁর নিথরদেহ রাখা হয় হাসপাতালের মর্গে। সেখান থেকে বুধবার সকালে কলকাতার গল্ফগ্রীনে অমিয় চৌধুরীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় মরদেহ, সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান পরিবার ও স্থানীয় মানুষজন। সকাল ১০-১১ টা পর্যন্ত প্রয়াত ড. অমিয় চৌধুরীর মরদেহ শায়িত রাখা হয় গল্ফ গ্রীণের দুরদর্শন কেন্দ্র সংলগ্ন উদয় শঙ্কর ভবনে। এসময় তাঁর পরিবার, আত্মীয়স্বজন, অনুরাগী সহ বহু মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। 

রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তরফে প্রয়াত ড. অমিয় চৌধুরীর স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, নাট্যকার বিভাস চক্রবর্তী, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করে শোকবার্তা পাঠান তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জিও।  

আজ বুধবার বিকালে কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। 

পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. অমিয় চৌধুরী রাজ্যটির উচ্চ শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। কলকাতার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ গবেষণা কেন্দ্রের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। কলকাতার পাশাপাশি ভারতের প্রথম সারির সংবাদপত্রে কাজ করেছেন। একজন সমাজকর্মী হিসাবেও যথেষ্ট পরিচিত ছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

উল্লেখ্য, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন অধ্যাপক অমিয় চৌধুরী। সেসময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিয় চৌধুরী তাঁর সহকর্মী ও বন্ধুদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের সহায়তায় অর্থ সংগ্রহ করেন।
 
একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ২০১৩ সালের মার্চে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ পান প্রয়াত অমিয় চৌধুরী। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননার ক্রেস্ট তুলে দেন অধ্যাপক অমিয় চৌধুরীর হাতে।

বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর