২৪ জুন, ২০১৮ ২০:৩১

প্রেমের টানে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় কিশোরী, অতঃপর...

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

প্রেমের টানে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় কিশোরী, অতঃপর...

কথায় আছে, ভালবাসা সীমানা মানে না। আর সেই ভালবাসার টানেই দেশ ছেড়ে সোজা বাংলাদেশে হাজির সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার এক নাবালিকা প্রেমিকা। ঘাস কাটার নাম করেই তারকাঁটার বেড়া টপকে বাংলাদেশের প্রেমিকের কাছে। অবশেষে ছয় দিন পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র সহায়তায় গত শুক্রবার বাংলাদেশ থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে মালদার তপন থানার পুলিশ। এরপরই ওই ভারতীয় কিশোরীকে তুলে দেওয়া হয় তার পরিবারের হাতে। যদিও ওই কিশোরী এটা জানাতে ভোলেনি যে নিজের ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করবে এবং এরপরই ফের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে তার ভালবাসার পাত্রটিকে বিয়ে করবে। 

পুলিশ সূত্রে খবর, তপন থানার অধীন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গোপালনগর এলাকায় বাড়ি ১৪ বছর বয়সী শরিফা খাতুনের ( নাম পরিবর্তিত)। স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তারকাঁটার ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে জমি থাকার সুবাদে চাষবাস ও ঘাস কাটার জন্য ছোট বেলা থেকেই বাবার হাত ধরে সেখানে যেত শরিফা। ওপারে যাতায়াতের সুবাদেই মাস কয়েক আগে বাংলাদেশের নওগাঁর আইহাই গ্রামের বাসিন্দা করিম বাবু নামে এক যুবকের পরিচয় হয় শরিফার। ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক প্রেমে আবদ্ধ হয়। এমনকি প্রেমিকার টানে তারকাঁটার ফাঁক গলে বাংলাদেশি যুবকও বেশ কয়েকবার ভারতে চলে আসে। এরই মধ্যে চলতি মাসের গোড়ার দিকে শরিফাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় করিম। আর সেই আবেগে গা ভাসিয়ে গত ১৭ জুন ঘাস কাঁটার নাম করেই সীমান্ত পেরিয়ে নিজের জমিতে যায় শরিফা। সেখান থেকেই প্রেমের টানে করিমের নওগাঁর বাড়ি চলে যায় শরিফা এবং সেখানেই থাকতে শুরু করে শরিফা। এদিকে বিকালে মেয়ে বাড়িতে না ফেরায় ১৮ জুন তপন থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে শরিফার পরিবার। 

এরপরই তপন থানার পুলিশ পুরো বিষয়টি জানায় বিএসএফ’কে। এরপর বিএসএফ’এর তরফে ওই ভারতীয় কিশোরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয় বিজিবি-কে। পরে দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহায়তা শরিফাকে উদ্ধার করে তপন থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

তপন থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) সৎকার সাংবো জানান, ‘সীমান্ত পেরিয়ে ওই ভারতীয় কিশোরীর বাংলাদেশে চলে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই বিএসএফ’এর সাথে যোগাযোগ করা হয়। এরপর তারা বিজিবি’এর সাথে যোগাযোগ করে ওই কিশোরীর সন্ধানে অভিযান চালানো হয়। শেষে করিমের বাড়িতে ওই তরুণীর খোঁজ মেলে। এরপর তাকে উদ্ধার করে বিএসএফ’এর সহায়তায় তার পরিবারের তাতে তুলে দেওয়া হয়’। 

এদিকে, মেয়েকে ফিরে পাওয়ায় খুশি শরিফার বাবা-মা। কিন্তু শরিফা জানিয়েছে যে, করিমের সাথে তার এই বিচ্ছেদ সাময়িক। সে জানায়, ‘আমি করিমকেই বিয়ে করবো, অন্য কাউকে নয়। আমার বয়স যখন ১৮ বছর হবে, আমি সীমান্ত পেরিয়ে করিমের কাছে চলে যাবো। তখন আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না’। 

বিডি-প্রতিদিন/২৪ জুন, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর