৩ আগস্ট, ২০১৮ ১৩:৩৪
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুগত বসু

'আসাম আরেকটি রাখাইনে পরিণত হবে'

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

'আসাম আরেকটি রাখাইনে পরিণত হবে'

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও ইতিহাসবিদ সুগত বসু বলেছেন, অাসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখ মানুষকে বাংলাদেশে বিতাড়ন বা পুশ ব্যাক-এর ঘটনায় নিকটতম প্রতিবেশি দেশটির সাথে কেবল সম্পর্কই খারাপ হবে না বরং ভারতের অাসাম রাজ্য আরেকটা রাখাইন প্রদেশে পরিণত হবে।

ইকোনমিক টাইমস'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এটা সতর্কবাণীর মতো শোনালেও আমি ভীত এই কারণে যে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি যদি তাদের নাগরিক নিবন্ধনের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করে তবে অাসামকে তারা আরেকটা রাখাইন প্রদেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটাবে, ঠিক মিয়ানমারের রাখাইনে যেভাবে সামরিক শাসন চালিয়েছে। আর তখন আন্তর্জাতিক মঞ্চও ভারতকে মিয়ানমারের সাথে এক আসনে বসাবে।

উল্লেখ্য, নির্যাতনের শিকার হয়ে গত আগস্ট থেকে মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশ থেকে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম ক্রমবর্ধমান শরণার্থী সংকট বলেও অভিহিত করা হয়। বাংলাদেশের গৃহহারা বাঙালি মুসলিমের তকমা দিয়ে ২০১৪ সালের জনগণনা থেকে এই রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সুগত বসু সতর্ক আশঙ্কা অাসাম থেকে নাগরিক বিতাড়নের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও ভয়ানক বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের (ভারত) এখন একটাই বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশি রাষ্ট্র আছে তা হল বাংলাদেশ। কিন্তু অাসাম থেকে এই নাগরিকদের বিতাড়নের সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশি দেশের সাথে আমাদের মূল্য পরিশোধ করতে হতে পারে।

নাগরিক নিবন্ধনের কারণে বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে দুই দিন আগে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জিও। দিল্লিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা জানান, সব বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশকারী বলে যেটা বলা হচ্ছে-সেটা ভুল। এর ফলে বাংলাদেশের সাথে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই অাসামে প্রকাশিত হয় জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকা। এনআরসি’এর কাছে জমা পড়া ৩.২৯ কোটি আবেদনকারির মধ্যে চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ২.৮৯ কোটির মানুষের নাম। তালিকা থেকে বাদ পড়ে প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দা। এরপর থেকেই গত কয়েকদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে ভারতে। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর