৫ আগস্ট, ২০১৮ ১০:০২

'প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নেই মমতা অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সরব'

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

'প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নেই মমতা অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সরব'

ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সিনিয়র নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ইস্যুতে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ভোট ব্যাংকের কারণেই মমতা এই ইস্যুতে তোষণের রাজনীতি করছেন। 

শনিবার কলকাতায় সংবাদ সম্মেলনে মমতাকে ‘কুর্সি দিদি’ বলে আখ্যায়িত করে বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘এটা খুবই লজ্জাজনক ঘটনা যে কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং যেখানে বারবার আশ্বাস দিয়েছেন যে এটা চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জি নয়, খসড়া মাত্র। তার পরেও সকলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন মমতা। সাংবাদিধানিক পদে বসে তিনি গৃহযুদ্ধের কথা বলে হুমকি দিচ্ছেন। দিল্লিতে গিয়ে এনআরসি ইস্যুতে বিরোধিতার জন্য সকলের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন কিন্তু কেউ তাকে এব্যাপারে সমর্থন তো দেয়নি, প্রত্যেকেই তাকে চা খাইয়ে বিদায় দিচ্ছে।’

অনুপ্রবেশে ইস্যুতে মমতার অবস্থান বদল নিয়েও এদিন তোপ দাগেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির অন্যতম এই সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালে লোকসভায় অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জি সরব হয়েছিলেন, স্পীকারের দিকে কাগজ ছুঁড়েছিলেন। কিন্তু ১৩ বছর পর কি হল যে এখন অনুপ্রবেশের সমর্থনে কথা বলছেন? কেন এই ইউ টার্ন? মমতার এই ভোলবদল নিয়ে আমরা সত্যিই অবাক। তৃণমূলকেই এর উত্তর দিতে হবে। কেবলমাত্র ভোট ব্যাংকের স্বার্থেই এই তোষণের রাজনীতি করছেন মমতা।’ তার দাবি এরাজ্যের মানুষ বুঝেছে যে ভোট ব্যাংক ছাড়া এরাজ্যে কিছুই হয় না, এমনকি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও অখন্ডতা বিসর্জন দিয়েও এই কাজ চলছে। 

বিজয়বর্গীয়ের দাবি ‘অনুপ্রবেশ ভারতের সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। মৌলিক অধিকার হস্তক্ষেপ করছে। অনুপ্রবেশকারীরা সবকিছুতেই থাবা বসাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গেও বেকারত্বের কারণ হল এই অনুপ্রবেশ। কোথাও কোথাও দেশের সংস্কৃতিকে আঘাত করেছে’। 

অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থী-দুটোই যে আলাদা বিষয় তার ব্যাখ্যা দিয়ে বিজেপি নেতার সাফ জবাব ‘শরণার্থীদের দেশে জায়গা দেওয়া যেতে পারে কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের নয়’। 

উল্লেখ্য, অাসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণের তালিকা থেকে ৪০ লাখ নাগরিকের নাম বাদ পড়াকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে সুর চড়িয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মমতার অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই বিজেপি সরকার এই কাজ করছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের নামে অাসাম থেকে বাঙালি বিতাড়ণের চেষ্টা চালাচ্ছে। হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা এও বলেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার যদি তাদের সিদ্ধান্ত বদল না করে তবে গৃহযুদ্ধ লেগে রক্তগঙ্গার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। 

এদিকে গত বৃহস্পতিবার অাসামের শিলচর বিমানবন্দরে তৃণমূল কংগ্রেসের ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের আটকে রাখার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জুড়ে কালাদিবস পালন করেছে তারা। কলকাতার পাশাপাশি জেলায় জেলায় বুকে কালো ব্যাজ পরে কোথাও পথসভা, মানবন্ধন কোথাও রাস্তা অবরোধ করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। 

বিডি প্রতিদিন/৫ আগষ্ট ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর