শিরোনাম
১৪ অক্টোবর, ২০১৮ ২১:০১

দলের প্রচার বাড়াতে বিজেপির টার্গেট 'দুর্গাপূজা'

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

দলের প্রচার বাড়াতে বিজেপির টার্গেট 'দুর্গাপূজা'

আগামী বছরের গোড়ার দিকেই ভারতে লোকসভার নির্বাচন। তার আগে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের জনসংযোগ বাড়াতে এবার বাঙালির বৃহত্তম উৎসব দুর্গাপূজাকে কাজে লাগাতে চলেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ঠিক হয়েছে গোটা রাজ্যে কমপক্ষে ৩ হাজার বইয়ের স্টল তৈরি করা হবে। বিভিন্ন পূজা প্যান্ডেলের বাইরে ওই স্টলগুলিতে প্রদর্শিত বইগুলিতে থাকবে বিজেপির মতাদর্শ সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখা। 

বিজেপির মতাদর্শের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও জনসংঘের আইকন দীনদয়াল উপাধ্যায় এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিভিন্ন কাজ সম্পর্কিত নানা পুস্তক। এছাড়া থাকছে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) সম্পর্কিত পুস্তিকা এবং নাগরিকত্ব সংশোধন বিল নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পুস্তিকাও রাখা হবে স্টলগুলিতে। 
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানান, ‘চলতি বছরে সারা রাজ্য থেকে আমাদের কাছে তিন হাজার বইয়ের স্টল তৈরির নির্দেশ এসেছে। আমাদের আশা বিভিন্ন পূজা মন্ডপের বাইরে এই স্টলগুলো আমরা তৈরি করে উঠতে পারবো।’ 

রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিমত, এ রাজ্যে দলের সংগঠনের ইতিহাসে দুর্গাপূজায় এত বেশি সংখ্যক স্টল তৈরির উদাহরণ নেই। তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের দল এত শক্তিশালী ছিল না যে পূজা মন্ডপের বাইরে স্টল দিতে পারতো। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে এবং আরও অধিক সংখ্যায় মানুষ আমাদের সাথে যুক্ত হতে চাইছেন।’ যদিও বিজেপির নেতৃত্বের আশঙ্কা ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নির্দেশে কিছু পূজা মন্ডপের বাইরে বিজেপি হয়তো বইয়ের স্টল খুলতে সমর্থ হবে না।

বিজেপির লক্ষ্য অসমের এনআরসি ইস্যুটি তুলে ধরার পাশাপাশি গোটা দেশের সুবিধার জন্য এনআরসি প্রক্রিয়া কিভাবে চালু করা হচ্ছে তাও সকলের সামনে তুলে ধরা। এ ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ জানান, ‘অসমের এনআরসি ইস্যুটিকে সকলের সামনে তুলে ধরতে আমরা এই মঞ্চকে ব্যবহার করতে চাইছি এবং ওই রাজ্য ও গোটা দেশের কাছে কতটা সুবিধাজনক হবে তাও তুলে ধরা হবে। এই ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে যে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে তাও বলা হবে।’ 

দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্যটিতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের সাফল্যে বজায় রাখতে চাইছে রাজ্য নেতৃত্ব, তাদের লক্ষ্য মানুষের মধ্যে পৌঁছে আগামী লোকসভায় আরও ভাল ফলাফল করা। পঞ্চায়েত নির্বাচনেই বিরোধী দল সিপিআইএম ও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের পরই দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ-ও একাধিক অনুষ্ঠানে বলে আসছেন যে আসন্ন লোকসভার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গই তাদের কাছে প্রথম অগ্রাধিকার। সাম্প্রতিক সময়ে দলের কর্মীদের সামনে অমিত শাহ ঘোষণা দিয়েছেন এ রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ২২টি আসনে জয়লাভ করাই তাদের লক্ষ্য। 

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহুবছর ধরেই দুর্গাপূজা প্যান্ডেলের বাইরে বইয়ের স্টল করে দলের লিফলেট বিলি, মতাদর্শের বিভিন্ন বই বিক্রি করে আসছে সিপিআইএম। ২০১১ সালে বামেদের উৎখাত করে রাজ্যটিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে পূজা প্যান্ডেলের বাইরে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’-এর স্টল তৈরির মাধ্যমে জনসংযোগ করছে ঘাসফুল শিবির। আর এবার সেই জায়গা ধরতে চাইছে বিজেপি!

এব্যাপারে তৃণমূলের মহাসচিব ও পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি জানান, ‘আমাদের কাছে বাংলা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাসের অভিন্ন অংশ হল দুর্গাপূজা। আমরা একে উৎসব হিসাসেবেই ধরে থাকি। আমরা বিজেপির মতো নই, যারা মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে।’ 


বিডি-প্রতিদিন/১৪ অক্টোবর, ২০১৮/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর