২৩ অক্টোবর, ২০১৮ ১৫:০৫

১২ ঘণ্টার হরতালে আসামে মিশ্র প্রভাব

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

১২ ঘণ্টার হরতালে আসামে মিশ্র প্রভাব

নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী বিল বাতিলের দাবিতে ৪৬টি সংগঠনের ডাকা আধা বেলা হরতাল চলছে। বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীরা সড়ক ও রেল অবরোধের চেষ্টা করলে তাদের পুলিশ সরিয়ে দেয়। যদিও তার মধ্যেই একাধিক জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে হরতালের সমর্থনে স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় কম থাকলেও তা পুলিশের ঘেরাটোপেই চালানো হচ্ছে। সহিংসতায় আশঙ্কায় সাধারণ মানুষকেও পথে নামতে দেখা যায়নি। দোকান, বাজার, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও ছিল প্রায় বন্ধ।

অাসামের কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস), অাসাম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ (এজেওয়াইসিপি) সহ ৪৬ টি সংগঠনের ডাকা এই হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস ও অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)। ফলে এই হরতাল অন্য মাত্রা নিয়েছে।

যদিও বিরোধীদের ডাকা এই হরতালকে ব্যর্থ করতে অাসামের বিজেপি সরকারও কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে। রাজ্যের প্রতি জেলার জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনভাবেই যাতে এই হরতাল সফল না হয়। প্রতিটি সরকার ও বেসরকারি কার্যালয় খোলা রাখার পাশাপাশি পরিবহন ব্যবস্থাও যাতে সম্পূর্ণ সচল থাকে সেদিকেও কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। জেলায় জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাস্তায় নেমে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে গ্রেফতারের নির্দেশও দিয়েছে সরকার। এদিনও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করার জন্য প্রায় শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ।

নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী বিল নিয়ে কয়েকদিন ধরেই উত্তাল রাজ্য। আগামী শীতকালীন অধিবেশনই এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি সংসদে পাস করাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই লোকসভায় আনা হয়েছে ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-২০১৬’ এবং আলোচনার জন্য বিলটিকে পাঠানো হয়েছে সংসদের যৌথ কমিটিতে। ভারতের ১৯৯৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন হলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা সেইসব দেশের হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, পার্সিসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের আর অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করা হবে না ফলে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতেও আর কোন বাধা থাকবে না। বিজেপি এতে সমর্থন করলেও অধিকাংশ দল বা সংগঠনই এর বিরুদ্ধে। তাদের বক্তব্য, ধর্মের ভেদাভেদ না করে বরং বৈধ নথি ছাড়া যারাই ভারতে বসবাস করছে তাদের সকলকেই অনুপ্রবেশকারী হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

মঙ্গলবার কেএমএসএস-এর দারং জেলার সাধারণ সম্পাদক কবীর মন্ডল জানান ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এনে কেন্দ্র কয়েক লাখ হিন্দু বাংলাদেশিদের এখানে বসবাসের সুযোগ করে দিতে চাইছে কিন্তু আমরা কেন্দ্রের সেই ষড়যন্ত্রকে সফল হতে দেবো না।’

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার যদি সংসদে এই বিল পাস করাতে পদক্ষেপ নেয় সেক্ষেত্রে দলীয় সাংসদরা তার বিরোধিতা করবে। রাজ্যের বিজেপি সরকারের শরিক দল অাসাম গণ পরিষদও এর বিরোধী। এমন এক প্রেক্ষিতে অাসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল বারবারই আশ্বাস দিয়েছেন, অাসামবাসীর অস্তিত্ব সংকটে পড়ুক এমন কোন কাজ তারা করবে না। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা  

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর