১৪ নভেম্বর, ২০১৮ ১২:৫৫

ওয়েস্টবেঙ্গল ‘বাংলা’ হতে পারে না, জানাল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ওয়েস্টবেঙ্গল ‘বাংলা’ হতে পারে না, জানাল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার

ওয়েস্টবেঙ্গলের নাম বদল করার যে স্বপ্ন দীর্ঘদিন দিন ধরে দেখে আসছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, তার সেই ইচ্ছায় আপত্তি জানাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মমতার ইচ্ছা ছিল, রাজ্যের নাম বদল করে রাখা হোক ‘বাংলা’। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠানো হয়। কিন্তু ওই নামে প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে মিল থাকার কারণেই ওই নামটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রাজ্যের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরিবর্তে মন্ত্রণালয়ের তরফে রাজ্যকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ‘বাংলা’র পরিবর্তে ‘পশ্চিমবঙ্গ’ নাম রাখা যেতে পারে।

রাজ্যের নাম বদল করতে চেয়ে মমতা ব্যানার্জির সরকার ২০১১, ২০১৬ এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে তিনবার প্রস্তাব পাঠায়। প্রথমবার কেন্দ্রের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-২ সরকার সেই প্রস্তাব খারিজ করে। সেসময় কোন কারণ দেখানো হয়নি।

দ্বিতীয়বার ২০১৬ সালে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি-এই তিনটি ভাষায় নাম রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল বাংলায় রাজ্যের নাম হবে ‘বাংলা’, হিন্দিতে ‘বঙ্গাল’ এবং ইরেজিতে ‘বেঙ্গল’। কিন্তু বিজেপি শাসিত এনডিএ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রাজ্যকে জানানো হয়েছিল যে এর মধ্যে কোন একটি নাম তিনটি ভাষাতেই করা হোক।

এ ব্যাপারে রাজ্যটির বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, আমরা বারে বারে দাবি জানিয়ে আসছি যে ওয়েস্টবেঙ্গলের নাম যদি পরিবর্তন করতে হয় তবে তিনটি ভাষাতেই ‘পশ্চিমবঙ্গ’ রাখা হোক।’

সূত্রে খবর, ওয়েস্টবেঙ্গলের নাম ‘বাংলা’ হলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ‘বাংলা’ ও ‘বাংলাদেশ’ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। নামের সাদৃশ্য থাকার কারণে দুই বাংলাকে পৃথক করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই কারণেই রাজ্যের নাম বদল করে ‘বাংলা’ করার যে প্রস্তাব মমতার রেখেছেন তাতে আপত্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিতে এই উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়। ভারতের সাথে বাংলাদেশের একটি সুসম্পর্ক বিরাজ করছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সব দিক ভেবে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে তাতে মনে করা হচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে এই আপত্তি থাকার কারণে রাজ্য সরকারকে ‘পশ্চিমবঙ্গ’ নামটিই রেখে দিতে হবে, না হয় অন্য নাম খুঁজতে হবে যাতে বাংলাদেশের সঙ্গে নামের ক্ষেত্রে কোন সাদৃশ্য না থাকে।

উল্লেখ্য রাজ্যের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইংরেজীতে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল’ হওয়ায় এর প্রথম অর ডব্লিউ থাকায়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বা আলোচনাচক্রে রাজ্যের প্রতিনিধির ডাক আসে একেবারে শেষে। ফলে জাতীয় স্তরের সেই আলোচনায় রাজ্যটির প্রতিনিধিরা কার্যত বিশেষ কিছুই বলার সুযোগ পান না, কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সভাঘর সেসময় প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় নয়তো অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। অন্যদিকে বাংলার প্রতিনিধিদের দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। ধৈর্য হারিয়ে যায় রাজ্যের প্রতিনিধিদেরও। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর