১৯ নভেম্বর, ২০১৮ ২৩:২১

মোদিকে কুপোকাত করতে নবান্নে মমতা-নাইডু সাক্ষাৎ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

মোদিকে কুপোকাত করতে নবান্নে মমতা-নাইডু সাক্ষাৎ

লক্ষ্য আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে কুপোকাত করা। আর তাই বিরোধী জোটকে আরও শক্তিশালী করতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সাথে বৈঠক করলেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যটির শাসকদল তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু। 

সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় নবান্নে এই দুই অ-বিজেপি দলের প্রধানরা মুখোমুখি বৈঠকে বসেন। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নাইডু বলেন, ‘গণতন্ত্র আজ বিপন্ন তাই রাষ্ট্রকে বাঁচাতে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একজোট হতে হবে। সিবিআই, আরবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), ইনকাম ট্যাক্স, কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর মতো সবকয়টি প্রতিষ্ঠানই প্রচন্ড চাপে রয়েছে। সংখ্যালঘু ও দলিতদের ওপর অসহিষ্ণুতা বাড়ছে, রুপির অবমূল্যায়ন হচ্ছে, জ্বালানির দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদেরকেও ভয় দেখানো হচ্ছে।’ 

নাইডু আরও বলেন ‘মমতা দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। সেজন্যই তার সাথে সাক্ষাতটা খুবই জরুরি।’ 

অন্যদিকে ২০১৯-এ মহাজোটের মুখ কে হবে সে প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ‘প্রত্যেকেই মহাজোটের মুখ হবেন। সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেই নিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হবে।’ এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করতে রাজ্যে আসায় ট্যুইট করে নাইডুকে ধন্যবাদ জানান মমতা। 

উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন জোট বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (এনডিএ) থেকে বেরিয়ে আসেন নাইডুর নেতৃত্বাধীন তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। অন্ধ্র প্রদেশের জন্য বিশেষ মর্যাদা না পেয়েই এনডিএ ছাড়ে টিডিপি। পরে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থাও আনে তারা। শুধু তাই নয়, বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে জোট গঠনের প্রচেষ্টাও চালাতে থাকেন নাইডু। 

এর আগেও মমতার সাথে একাধিকবার ফোনে কথা বলেন নাইডু। গত কয়েক মাসে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ.ডি.দেবগৌড়া, ডিএমকে সভাপতি এম.কে.স্টালিন, কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টি (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, সাবেক বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা, লোকতান্ত্রিক জনতা দল নেতা শরদ যাদব-এর সাথেও বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করেছেন নাইডু। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়া করেছেন নাইডু। গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সরাসরি অধীনস্থ) সিবিআই-কে অন্ধ্র প্রদেশে প্রবেশের ব্যপারে রাজ্যের আগাম অনুমতি নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছেন নাইডু। 

অন্যদিকে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে বৃহত্তর জোট গড়ার লক্ষ্যে উদ্যোগী হয়েছেন মমতাও। নোট বাতিল, মুদ্রাস্ফিতী, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, অসহিষ্ণুতা সহ একাধিক ইস্যুতে গত কয়েক মাস ধরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মমতা। চন্দ্রবাবু নাইডুর মতো মমতা সিবিআই-এর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর