২০ নভেম্বর, ২০১৮ ১৯:০৮

'ধমক খেয়ে' মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা

অনলাইন ডেস্ক

'ধমক খেয়ে' মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির 'ধমক খেয়ে' মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন রাজ্যের দমকল ও আবাসনমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকালে মুখ্যমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারির কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি। খবর জি নিউজের।

নবান্ন সূত্রে খবর, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। তাঁর ইস্ততফাপত্র রাজভবনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল মেয়র পদ থেকেও শোভন চট্টোপাধ্যায় ইস্তফা দিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজকর্ম নিয়ে এদিন বিধানসভায় মুখমন্ত্রীর ধমকের মুখে পড়েন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এদিন সকাল ১০টা ৪০টায় বিধানসভায় নিজের ঘরে ঢোকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজের ঘরে ঢোকার ৫ মিনিটের মধ্যেই তাঁর ঘরে ঢোকেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। মিনিট দশেক দুজনের মধ্যে একান্তে কথা হয়। তখনই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাজকর্ম নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। নেত্রীর ধমকের মুখে পড়েন আবাসন ও দমকলমন্ত্রী। ব্যক্তিগত জীবনে টানাপোড়েনের জেরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব কোনোটাই শোভন চট্টোপাধ্যায় ঠিকমতো পালন করতে পারছেন না বলে, তাঁকে সাফ জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এরপর নবান্নে দমকল দফতরের অনুষ্ঠানে ফের মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যায় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। সেখানেও দেখা যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে রাগের স্বরে কিছু বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই দুপুর সাড়ে ৩টার সময় নবান্নে নিজের ঘরে যান শোভন চট্টোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা মুখ্যমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি গৌতম স্যানালের কাছে যান। এরপর তার হাতেই ইস্তফাপত্র তুলে দেন আবাসন ও দমকলমন্ত্রী। এরপর বিকাল ৪টা ২০মিনিটে নবান্ন ছেড়ে বেরিয়ে যান শোভন চট্টোপাধ্যায়। যদিও, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইস্তফার কথা অস্বীকার করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।

দলীয় সূত্রে খবর, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাজকর্ম নিয়ে ইদানিং খুবই ক্ষুব্ধ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ব্যক্তিজীবনের জন্য শোভন চট্টোপাধ্যায় কাজে অমনোযোগী হচ্ছেন বলে বার বারই দলের অন্দরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা ব্যানার্জি। এই নিয়ে কিছুদিন আগেও দলনেত্রীর ধমকের মুখে পড়তে হয় একদা 'আস্থাভাজন' শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।

প্রসঙ্গত, স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডিভোর্স মামলাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। প্রকাশ্যে চলে আসে মেয়র-মেয়রপত্নীর পারিবারিক বিবাদ। ব্যক্তিগত জীবনে টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে দলের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়ে মেয়রের। দলের অন্দরে কানাঘুষোয় একসময় এমনটাও শোনা যায়, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় নাকি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দেবেন। যদিও বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি। কিন্তু, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ জমা হয় দলের মধ্যে।

এরপর দলীয় বৈঠকে প্রকাশ্যেই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ভর্তসনা ও সতর্ক করতে শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। তার কিছুদিনের মাথাতেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ডানা ছাঁটেন দলনেত্রী। অক্টোবরের শুরুর দিকে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। জেলা সভাপতির পদ থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে জেলা পর্যবেক্ষক করা হয়। খর্ব করা হয় তাঁর ক্ষমতা। এবার মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সূত্রে খবর, আগামীকালই শোভন চট্টোপাধ্য়ায় মেয়র পদ থেকেও ইস্তফা দিতে পারেন।

বিডি-প্রতিদিন/২০ নভেম্বর, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর