৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৬:২৮

শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশ হয়ে ট্রেন পৌঁছাবে কলকাতায়!

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশ হয়ে ট্রেন পৌঁছাবে কলকাতায়!

২০২১ সালের মধ্যেই ফের শুরু হতে চলেছে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিলিগুড়ি-শিয়ালদহ ভায়া বাংলাদেশ রেল চলাচল। ইতিমধ্যে ওই লাইনে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে কাজও শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় রেল। প্রথমে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করলেও অদূর ভবিষ্যতে যাত্রীবাহী ট্রেনও দেখা যেতে পারে ওই রুটে। আর তাই যদি হয় সেক্ষেত্রে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতায় পৌঁছতে প্রায় ৯ ঘণ্টা সময় কমে যেতে পারে।

১৯৬৫ সালের আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চিলাহাটি পর্যন্ত ট্রেন যেতো, পরে সেটাই আসত কলকাতায়। কিন্তু ওই বছরেই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর থেকে ওই রেলপথে পুরোপুরি ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে ওই রেল রুটকে পুনরুজ্জীবত করতেই এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের রেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।

২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরেই দুই দেশের মধ্যে নতুন রেল সংযোগ স্থাপনের ব্যাপারে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। 

রেল সূত্রে খবর শিলিগুড়ি থেকে শিয়ালদহ, ভায়া বাংলাদেশ-এই যাত্রাপথে ফের ট্রেন চলাচল শুরু করলে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ২০০ কিলোমিটার (বর্তমান দূরত্ব ৫৭৩ কিলোমিটার)। শিয়ালদহ রেল স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছেড়ে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের ভিতর প্রবেশ করবে। এরপর তা পার্বতীপুর-দর্শনা-সঈদপুর-তোরণবাড়ি-দোমার-চিলাহাটি হয়ে হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে প্রবেশ করবে।

ভারতের হলদিবাড়িতে এই রেল প্রকল্পের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য আগেই বরাদ্দ ছিল ৩১ কোটি রুপি, সম্প্রতি অতিরিক্ত আরও ১১ কোটি রুপি মঞ্জুর করেছে ভারতীয় রেল। অন্যদিকে বাংলাদেশ রেলও চিলাহাটি থেকে সীমান্ত পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন পাতাসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ৮০.১৭ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে বলে খবর।

নিউ জলপাইগুড়ির এডিআরএম প্রতীম রায় জানান, ২০২১ সালের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ট্রেন চালাতে রেল লাইন পাতার কাজও শুরু করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, হলদিবাড়ি হল উত্তরবঙ্গের ট্রেন টার্মিনাল যেখান থেকে হলদিবাড়ি-কলকাতা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস এবং দার্জিলিং মেল যাত্রা শুরু করে। 
হলদিবাড়ির ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার জানান ‘হলদিবাড়ি থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৩.০৫ কিলোমিটার রেল লাইন পাতার কাজ শেষ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে সেখানে একটি উড়ালপুল ও বৈদ্যুতিক সিগনালের কাজও চলছে। ৫৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। রেল লাইনের ওপর আগে থেকে পাতা ৬০ কিলোগ্রাম ওজনের ক্ষমতা বহনকারী স্লিপারগুলিকে পরিবর্তন করে সেখানে ৯০ কিলোগ্রাম ওজন বইতে সক্ষম স্লিপার পাতার কাজ চলছে।

চলতি বছরের মার্চেই হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটে নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ভাবে একটি ইঞ্জিনও চালানো হয় বলে জানা গেছে। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর