৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৫:৫৬

না ফেরার দেশে চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

না ফেরার দেশে চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন

মৃণাল সেন

বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন মারা গেছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার ভবানীপুরে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই বাধ্যর্কজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি।

আপাতত তার মরদেহ পিস হেভেন-এ রাখা হবে। শিকাগো থেকে ছেলে কুণাল সেন বাড়িতে ফিরলে শেষ কৃত্য সম্পন্ন হবে বলে পারিবারি সূত্রে জানা গেছে।

১৯২৩ সালের ১৪ মে বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন এই বাঙালি চিত্র পরিচালক। সেখানেই স্কুলের গন্ডি পেরোনোর পর উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় আসেন।

কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে যাত্রা শুরু হয় মৃণাল সেনের। সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। প্রথম ছবিতে তেমন সাফল্য না পেলেও পরের ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’- ছবিতে নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন মৃণাল সেন। এরপর ‘বাইশে শ্রাবণ’ ছবিতে নিজের জাত চেনান মৃণাল সেন।

এছাড়াও ‘ভুবনসোম’, ‘অকালের সন্ধানে’, ‘কোরাস’, ‘মৃগয়া’, ‘পুনশ্চ’, ‘খারিজ’, ‘একদিন প্রতিদিন’, ‘পরশুরাম’, ‘অকালের সন্ধানে’, ‘ক্যালকাটা ৭১’, সহ একাধিক ছবি পরিচালনা করেছিলেন তিনি। ২০০২ সালে তার শেষ ছবি ‘আমার ভুবন’।
 
চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৮১ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করে। ২০০৫ সালে দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি ১২টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

১৯৮৫ সালে তাকে ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘কমান্ডার অফ দ্য অর্ডার অব আর্টস অ্যান্ড লেটারস’ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

প্রবাদপ্রতীম এই চিত্র পরিচালক বামপন্থিতে বিশ্বাসী থাকলেও কখনও সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান করেননি তিনি। তবে রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য হয়েছিলেন তিনি।

মৃণাল সেনের প্রয়াণ শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজনীতি ও চলচ্চিত্র জগতে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, সিপিআইএম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রমুখ।

এক শোক বার্তায় মমতা ব্যানার্জি জানান ‘মৃণাল সেনের মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত। চলচ্চিত্র জগতের কাছে এটা একটা অপূরণীয় ক্ষতি। তার পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
 
অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ট্যুইট বার্তায় জানান ‘এটা আমাদের সবার জন্য বড় ক্ষতি’।

অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় মৃণাল সেনের চলে যাওয়াকে ‘বাংলা সিনেমার মহীরুহের পতন’ বলে উল্লেখ করেছেন।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর