১১ জানুয়ারি, ২০১৯ ১২:০৪

চাচার বান্ধবীর সঙ্গে ভাতিজার সম্পর্ক, অতঃপর...

অনলাইন ডেস্ক

চাচার বান্ধবীর সঙ্গে ভাতিজার সম্পর্ক, অতঃপর...

সন্দেহ ছিল, বান্ধবীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে ভাতিজার। সেই সন্দেহের বশেই তাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন চাচা। এরপর ভাতিজাকে ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করে ফ্ল্যাটের মেঝেতেই তার দেহ পুঁতে দেন। পুলিশের চোখ এড়াতে শহর ছেড়ে অন্যত্র চলেও যান তিনি। ঘটনার প্রায় তিন বছর পর পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ওই ব্যক্তি। রবিবার ভারতের হায়দরাবাদ থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম বিজয়কুমার মহারাণা। ঘটনার সময় নয়ডার একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তিনি। ৩৭ বছরের বিজয় আদতে ওড়িশার গঞ্জাম জেলার বাসিন্দা। বান্ধবী দিল্লিতে থাকা শুরু করলে তিনিও সেখানে চলে আসেন। ২০১২ থেকে দিল্লির দ্বারকা এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। এর বছর তিনেক পর হায়দরাবাদ থেকে বিজয়ের ভাইপো জয় প্রকাশ তার ফ্ল্যাটে এসে ওঠে। এরপর থেকে বিজয়ের সঙ্গেই থাকতেন জয় প্রকাশ।

এক তদন্তকারী জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ের বান্ধবীর সঙ্গে জয় প্রকাশের ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। নিজের বান্ধবীর সঙ্গে ভাতিজার এই ঘনিষ্ঠতায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বিজয়। এরপর জয় প্রকাশকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

দ্বারকা পুলিশের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার রাজেন্দ্রসিংহ সাগরের দাবি, ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে জয় প্রকাশকে ঘুমের মধ্যেই খুন করে বিজয়। ফ্ল্যাটে একটি সিলিং ফ্যানের মোটর রাখা ছিল মেরামতির জন্য। খুনের অস্ত্র হিসাবে সেটাকেই বেছে নেন বিজয়। ঘুমন্ত জয় প্রকাশের মাথা ওই ভারী মোটর দিয়ে থেঁতলে দেন তিনি। এরপর বিছানার চাদরে তার দেহ মুড়ে একটি কম্বল চাপা দিয়ে নিয়ে যান ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে। সেখানকার মাটি খুঁড়ে সেখানেই জয় প্রকাশের দেহ কবর দেন বিজয়। যাতে কারও সন্দেহ না হয়, তার জন্য তার উপর কয়েকটি ফুলগাছের চারাও পুঁতে দেন।

এই ঘটনার সপ্তাহখানেক পর ডাবরি থানায় জয় প্রকাশের নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করে বিজয়। পুলিশের কাছে বিজয় দাবি করে, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি ভাতিজা। এর মাস দু’য়েক পর ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে দিল্লির নাঙ্গলোই এলাকায় চলে যান বিজয়। ২০১৭ সালে দিল্লির পাট চুকিয়ে হায়দরাবাদে থাকতে শুরু করেন তিনি।

গত বছরের অক্টোবরে দিল্লির ওই ফ্ল্যাটে মেরামতির কাজ শুরু হয়। সে সময়ই ওই ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে কঙ্কাল উদ্ধার হয়। শার্ট-নীল রঙের জ্যাকেট পরা একটি কঙ্কাল বিছানার চাদর ও কম্বলে মোড়া ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ফ্ল্যাটের মালিক বিক্রম সিংহকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিজয়ের নাম জানতে পারে পুলিশ। তদন্তে নেমে প্রথমে বিজয়ের কোনও খোঁজখবর পায়নি তারা। এমনকি, তার বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-পরিজনেরাও তার খোঁজ দিতে পারেনি। সে সময়ই সন্দেহ হয় পুলিশের। তদন্তের পর পুলিশে জানতে পারে, নিজের মোবাইল নম্বর বদলে ফেলেছেন বিজয়। এমনকি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত টাকা তুলে তা বন্ধও করে দিয়েছে। এরপর বিজয়ের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। মোবাইল টাওয়ারের সূত্র ধরেই গত ২৬ ডিসেম্বর বিশাখাপত্তনমে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশের একটি দল। এরপর ১ জানুয়ারি পৌঁছে যায় হায়দরাবাদে। সেখান থেকেই গত রবিবার বিজয়কে গ্রেফতার করে দিল্লিতে নিয়ে আসে পুলিশ। সূত্র: আনন্দবাজার

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর