১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০৮:৪৪

বঙ্গবন্ধু ধমনীতে প্রবাহিত রক্তস্রোতের গর্জন: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বঙ্গবন্ধু ধমনীতে প্রবাহিত রক্তস্রোতের গর্জন: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

আমাদের ধমনীতে যে রক্তস্রোত প্রবাহিত হয়, সেই রক্তস্রোতের যে গর্জন-ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু আমাদের ধমনীর রক্তে গর্জন তৈরি করে দিয়েছেন চিরতরে। এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।

রবিবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে ৪৩তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তিনি এ কথা বলেন।

এস বি আই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলা সাহিত্য ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনায় কবি আরও বলেন ‘নেতাজী বলতে যেমন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, স্বামীজি বলতে যেমন বিবেকানন্দকে বোঝায় তেমনি বঙ্গবন্ধু বলতে শেখ মুজিবুর রহমানকে বোঝায়। এই দুই বাংলাতে অনেক বন্ধু ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু কেউই আমাদের বন্ধু নয়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সম্পূর্ণ পুরুষ, তার মধ্যে এতটুকু নারী ভাব, কোন দুর্বলতা, ন্যাকামো ছিল না। তার কণ্ঠস্বরে একটা মেঘের গর্জন ছিল। প্রকৃত পুরুষ বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই। একশত ভাগ পুরুষ এবং এমন মানুষই নেতা হতে পারেন।’ 

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত বিশিষ্ট এই সাহিত্যিক জানান, আগামী দিনে ‘কলকাতা ও বঙ্গবন্ধু’ বলে একটি বই লেখার চেষ্টা করবেন তিনি।

বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’ এর অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসাবে উপস্থিত বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি জানান, ‘একটা ভাষাকে কেন্দ্র করে কোনো রাষ্ট্রের জন্ম হতে পারে বা একটা ভাষার জন্য মানুষ জীবন দিতে পারে, তার প্রমাণ হল বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতা লাভের জন্য আমরা যেমন রক্ত দিয়েছি তেমনি ভারতের সেনা সদস্যরাও রক্ত দিয়েছেন। তার জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ। এক কোটি মানুষকে তারা আশ্রয় দিয়েছে।’

তার অভিমত, ‘ভাষা ও সংস্কৃতি এক। জাতি হিসাবে আমরা বাঙালি। কিন্তু নাগরিক হিসাবে আমরা বাংলাদেশি আর আপনারা ভারতীয়। সেই কারণেই এই সীমানা।’ 

এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল এমপি, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব বেগম আকতারী মমতাজ, বাংলাদেশ বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুলাহ সিরাজী, কবি ও কলকাতা বুক সেলার্স এন্ড গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান প্রমুখ।

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন ‘দুই বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ভাষা এক হলেও এই বিভাজন মেনে নেওয়া যায় না। কারণ ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম রংপুর যাই, সেখানে বাংলাতে কথা বলতে পারি, আমি মাছ-ভাত খেতে ভালবাসি, তারাও ভালবাসে। আমি রবীন্দ্রসঙ্গীত ভালবাসি-তারাও ভালবাসে। নজরুল আমার প্রাণের কবি তাদেরও প্রাণের কবি। রেজওয়ানা চৌধুরী আমার প্রিয় শিল্পী-তাদের কাছেও তাই। কিন্তু তারপরেও এই বিভাজন কেন? 

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ট নেতৃত্বপ্রদানের কথা উল্লেখ করে অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ তার যাত্রা শুরু করে। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই শিল্পী, গায়ক, কবি, সাহিত্যিক সকলেই বঙ্গবন্ধুর মিছিলে সমবেত হয়েছিল। ৭ মার্চ ভাষণের পর সাড়ে সাত কোটি বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সকলের কণ্ঠে স্লোগান ছিল তুমি কে, আমি কে বাঙালি বাঙালি-তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা।’ 

আলোচনা শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পরিবেশিত হয়।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর