১৯ মার্চ, ২০১৯ ১৮:৩৮

বিমানবন্দরে স্বর্ণসহ মমতার ভাতিজা-বউয়ের আটকের গুঞ্জন!

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বিমানবন্দরে স্বর্ণসহ মমতার ভাতিজা-বউয়ের আটকের গুঞ্জন!

ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে মমতা ব্যানার্জি (ফাইল ছবি)

নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার স্ত্রীকে ছাড়াতে বিমানবন্দরের কাস্টমস ও কলকাতার পুলিশের সাথে তর্কাতর্কি ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে খবর, ওই নারী আর কেউ নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাতিজা, তৃণমূলের সাংসদ ও দলের ‘নাম্বার টু’ অভিষেক ব্যনার্জির স্ত্রী রুজিরা ব্যনার্জি!

ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার। ওইদিন ব্যাংকক থেকে থাই এয়ারওয়েজের বিমানে করে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন ওই নারী। এরপর বিমানবন্দরের স্ক্যানিং মেশিনে পরীক্ষার করার সময়ই তার কাছে স্বর্ণ মজুদ থাকার বিষটি ধরা পড়ে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ২ কেজি ওজনের স্বর্ণের বিস্কুট, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৬৮ লাখ রুপি। এরপরই তাকে আলাদা করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। ঘটনার পর ওই নারী ফোন করেন তার স্বামীকে। এর কিছুক্ষণ পরেই বিমানবন্দরে হাজির হয়ে যান কলকাতা পুলিশের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। আর তখনই জানা যায়, ওই নারী অভিষেক ব্যনার্জির স্ত্রী। এরপর ওই নারী যাত্রীকে ছাড়াতে শুল্ক দফতর ও পুলিশের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত খাতায় কলমে কোনো অভিযোগ দায়ের না করেই ওই নারীকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে বিমানবন্দরের অন্দরে সংশ্লিষ্ট মহলেও প্রবল ক্ষোভের সঞ্চার হয়। 

ঘটনা সামনে আসতেই কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও গায়ক বাবুল সুপ্রিয় এবং বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের কপি টুইট করে গোটা ঘটনার তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি কটাক্ষ করেন। 

স্বপন দাশগুপ্ত লেখেন, ‘এই ধরনের একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন কলকাতার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আপাতত যা ঘটেছিল তাতে মনে হয়েছে কাস্টমস এবং স্থানীয় পুলিশের মধ্যে একটা কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমাদের তদন্তকারী সাংবাদিকরা যদি আরও কিছু তথ্য বের করতে পারেন তবে এটি আরও মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে। এই ঘটনার পিছনে কি কোন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে?’

খোঁচা মারতে ছাড়েননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়-ও। তিনি আবার টুইট করে লিখেছেন, ‘একজন নারীকে দুই কেজি স্বর্ণসহ আটক করা হয়েছিল। তার কাছে থাইল্যান্ডের পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। কিন্তু যখন প্রত্যেকেই জানেন যে তিনি দক্ষিণ কলকাতার ভোটার এবং প্রভাবশালী তরুণ তুর্কীর স্ত্রী-তাই তাকে শনাক্তকরণের জন্য কোন পুরস্কার ঘোষণা করা হচ্ছে না। সম্পূর্ণ তদন্তের পরই আমরা এই ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হব।’ 

বিজেপির নারী মোর্চার প্রধান লকেট চ্যাটার্জিও একটি প্রতিবেদনের প্রতিলিপি টুইট করে অভিষেকের বক্তব্য দাবি করেছেন। 

যদিও এ ব্যাপারে তৃণমূলের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই এই ধরনের একটি ইস্যুকে বিজেপি যে কোনভাবেই হাতছাড়া করতে রাজি নয়, তা পরিষ্কার।

বিডি-প্রতিদিন/১৯ মার্চ, ২০১৯/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর