পশ্চিমবঙ্গে সরকারি আর.জি.কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অধ্যায়নরত নারী চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে গত ৯ আগস্ট ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। যদিও এই ঘটনার পরেই কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করে।
এরপরে গত মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এজলাসে একটা মামলা হয়। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া কেস ডাইরি দেখার পর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। গত মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট বিকেল থেকেই তদন্তের কাজ শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)।
মামলার তদন্ত ভার নেওয়ার পর সিবিআই-এর হাতে আটক হলেন আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের 'বিতর্কিত' সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আটক করে সল্টলেকের সিবিআই এর দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসা হয় সন্দীপ ঘোষকে।
আর জি করের চিকিত্সক-পড়ুয়ার 'ধর্ষণ ও খুন'-এর ঘটনার পর থেকেই অভিযোগের আঙুল সন্দীপ ঘোষের দিকে। এই ঘটনায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ জড়িত বলে সরব হয়েছে আরজি করের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। চাপের মুখে পড়ে ঘটনার ৩ দিন পর আরজি করের অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করেন সন্দীপ ঘোষ।
জানা গেছে, সন্দীপ ঘোষকে আগেই হাজিরা দেওয়ার নোটিশ পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সিটি। তবে সেই ডাকে সাড়া দেননি আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এবার রাস্তা থেকে তাকে পাকড়াও করলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।
আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মৌমিতা দেবনাথ মৃত্যুর পরেই হাসপাতালে সব চিকিৎসক, শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন সন্দীপ ঘোষের অপসারণ চেয়ে। এই আন্দোলনের পরেই আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সমান গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী প্রকাশ্যে সে কথা ঘোষণা করেছিলেন।
সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও নৃশংস খুনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আসা করছেন সিবিআই। আরও জানা গেছে, আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সিজিও কমপ্লেক্স এ নিয়ে এসে সিবিআই সেখানে চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধান অরুনাভ দত্ত চৌধুরী দু'জনকে একসঙ্গে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক