শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্রকে লাইফ সাপোর্টে বাঁচিয়ে রাখার প্রস্তাব

সংস্কার কাজে ব্যয় হবে ২২২ কোটি টাকা

গ্যাস সংকট ও যান্ত্রিক ত্র“টির কারণে বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ২২০ দিনই উৎপাদন বন্ধ থাকছে চট্টগ্রামের শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্রের। আর চালু থাকছে মাত্র ১৪২ দিন। ১৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ জন্য কেন্দ্রটিকে গ্যাস নির্ভরতা কমিয়ে ডুয়েল-ফুয়েলে কনভার্ট করতে চায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)। ডুয়েল-ফুয়েল করা হলে গ্যাস ও তেল উভয় প্রকার জ্বালানি দিয়েই উৎপাদন অব্যাহত রাখা সম্ভব। তবে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে প্রায় চার গুণ। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ পড়ে সর্বোচ্চ তিন টাকার মতো। আর তেলভিত্তিক হলে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ পড়ে ১২ টাকা থেকে ১৪ টাকা পর্যন্ত।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো একটি ক্রয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্র সংস্কার ও ডুয়েল-ফুয়েল করতে ২২২ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর পুরোটাই সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। চট্টগ্রাম নগরীসহ সারা দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে এই কেন্দ্রের উৎপাদন অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করে বিপিডিবি। বিদ্যুৎ সচিবের পাঠানো দরপ্রস্তাবের তথ্যমতে, ২০১০ সালের ১৮ আগস্ট উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে চলতি বছরের ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্যাস চালিত এ কেন্দ্রটি চালু ছিল ১৩ হাজার ৭১৬ ঘণ্টা বা ৫৭১ দিন। আর গ্যাস সংকট ও যান্ত্রিক ত্র“টির কারণে উৎপাদন বন্ধ ছিল ২১ হাজার ১৬৯ ঘণ্টা বা ৮৮২ দিন। সেই হিসাবে দেখা যায় কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়ার পর ১ হাজার ৪৫৩ দিন অতিবাহিত হয়েছে। যা প্রায় চার বছরের সমান। এতে প্রতি বছরের ৩৬৫ দিনের ২২০ দিনই বন্ধ ছিল এ কেন্দ্রটি। আর চালু ছিল মাত্র ১৪২ দিন। ডুয়েল-ফুয়েলে কনভার্ট করা না হলে আগামী শীত মৌসুমে কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কর হচ্ছে। কেননা শীত মৌসুমে গ্যাসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। তাই উৎপাদন অব্যাহত রাখার কথা বিবেচনায় নিয়ে এই ক্রয় প্রস্তাবটির অনুমোদন চেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সূত্র মতে, দেশে বিদ্যুতের বিরাট চাহিদা ও এর বিপরীতে সরবরাহ ঘাটতির কথা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ জন্য সব পুরনো কেন্দ্র মেরামত ও কিছু কিছু কেন্দ্রকে ডুয়েল-ফুয়েলে কনভার্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় এবং ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ সত্ত্বেও নিয়মিত উৎপাদনে থাকতে না পারায় সরকারি কেন্দ্রগুলোর তদারকি ও উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছে সরকার। এতে বাজেটে সার্বিক ভর্তুকিও কমে আসবে বলে মনে করে বিদ্যুৎ বিভাগ। ক্রয় কমিটির অনুমোদন পেলে খুব শীঘ্রই শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংস্কার ও ডুয়েল-ফুয়েল কার্যক্রম শুরু হবে। যেন আগামী শীত মৌসুমের শেষদিকে হলেও এ কেন্দ্র থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।

সর্বশেষ খবর