শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা
ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি

কারিগরি স্বাস্থ্য শিক্ষার আলোকবর্তিকা

কারিগরি স্বাস্থ্য শিক্ষার আলোকবর্তিকা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) থেকে সুলভে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা। অবদান রাখছেন সরকারি-বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্র ও হাসপাতালে।
আইএইচটি সূত্রে জানা যায়, দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। ফলে এর গুরুত্ব বিবেচনা করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি। নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এ কেন্দ্রটিই ছিল চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বপ্রথম ও বৃহত্তম কারিগরি স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান (হেলথ টেকনোলজি)। বর্তমানে তিন বছর মেয়াদি তিনটি কোর্স চালু আছে। এগুলো হলো ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি (ল্যাবরেটরি মেডিসিন), ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি (ডেন্টিস্ট্রি) ও ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি (রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং)। তবে তিন বছর মেয়াদি এ কোর্সগুলোকে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে চার বছর মেয়াদি করা হবে।
সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম বলেন, অত্যন্ত স্বল্পসংখ্যক সরকারি প্রতিষ্ঠানে কারিগরি স্বাস্থ্যশিক্ষা দেওয়া হয়। তাই করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে হেলথ টেকনোলজি পরিচালনা করে আসছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক কম মূল্যে এখানে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা কোর্স সম্পন্ন করা হয়। ইতিমধ্যে নতুন করে এমবিবিএস চিকিৎসক দ্বারা বিষয়ভিত্তিক ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ক্লাস নিলে শিক্ষার্থীরা এর সুফল ভোগ করবে। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘হেলথ টেকনোলজিতে ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) কোর্স ও বিএসসি কোর্স চালু, এমবিবিএস চিকিৎসক পদায়ন, ছাত্রী হোস্টেল নির্মাণ, ভবনের সামগ্রিক সংস্কারসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদের অধিভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে। সর্বশেষ একে একটি মেডিকেল কলেজে রূপান্তরের পরিকল্পনা আছে। বর্তমানে তিন বিভাগে ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। আটটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ডিপ্লোমা সমাপ্ত করেছে। সমাপ্ত হওয়া আট ব্যাচে ২৯২ জন শিক্ষার্থী সনদ নিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে।’
আইএইচটি সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানে তিন বিভাগে ক্যামিস্ট্রি, ইংরেজি, ফিজিক্স, বেসিক হিউম্যান অ্যানাটমি, বেসিক কমিউনিটি মেডিসিন, বেসিক ও জেনারেল মাইক্রোবায়োলজি, প্যারাসিটোলজি, প্রাথমিক চিকিৎসা, ল্যাবরেটরি টেকনিক, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি, হেমাটোলজি, ক্লিনিক্যাল ক্যামিস্ট্রি, বেসিক কম্পিউটার সায়েন্স, ইমোনলজি, হরমোনাল অ্যাসাই, হিস্টোপ্যাথলজি, চাইটোপ্যাথলজি ব্লাড ব্যাংকিং বিষয়ে প্রাকটিক্যাল ও থিয়োরিক্যাল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতি বিভাগে ২৫ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১১ জন নিয়মিত শিক্ষক ও ১৩ জন অতিথি শিক্ষক আছেন। জানা যায়, বর্তমানে কারিগরি স্বাস্থ্য (হেলথ টেকনোলজিস্ট) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাতে গোনা। তদুপরি সরকারি হাসপাতালেও হেলথ টেকনোলজিস্টের অনেক পদ শূন্য। তা ছাড়া প্রতিনিয়ত বাড়ছে বেসরকারি রোগ নিরূপণী কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ টেকনোলজিস্টের প্রয়োজন থাকলেও এর সংখ্যা অপ্রতুল। ফলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বরাবরই অনুধাবন করছে সবাই।

সর্বশেষ খবর