শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম বন্দরে বার্থ অপারেটর নিয়োগে টানাপড়েন

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) চারটি বার্থে আলাদাভাবে অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) সর্বশেষ বোর্ড সভায় এনসিটির চারটি বার্থ পরিচালনার জন্য জানুয়ারিতে উন্মুুক্ত টেন্ডার আহ্বান করার সিদ্ধান্ত নেয়। চবক’র এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ নিয়ে মঙ্গল ও বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপিসহ অপরাপর সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থায়ী কমিটি তাদের পূর্বেকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এনসিটিকে অবিভক্ত রেখে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে দক্ষ অপারেটর নিয়োগের সিদ্ধান্তে অটুট রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সেসঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের টেন্ডার আহ্বানের আগে টেন্ডার ডকুমেন্ট এম এ লতিফ এমপির নেতৃত্বাধীন সংসদীয় সাব কমিটিকে দেখানোর সুপারিশ করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির বুধবারের বৈঠকে। ফলে এনসিটি নিয়ে চবক ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মধ্যে নতুন করে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। পরপর দুই দিনের বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি, চবক চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়া ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড (ডিপিএম) পদ্ধতিতে এনসিটির দুটি টার্মিনাল পরিচালনা করে আসছে সাইফ পাওয়ারটেক। ডিপিএম পদ্ধতি বাতিল ও সাইফ পাওয়ারটেককে কালো তালিকাভুক্ত করার দাবিসহ ১০ দফা বাস্তবায়নে আড়াই মাস ধরে সংগ্রাম করে আসছে বন্দর রক্ষা পরিষদ। আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি দেড় মাস আগে লালদিঘী মাঠে অনুষ্ঠিত বন্দর রক্ষা পরিষদের সভা থেকে এক মাসের আল্টিমেটাম দিলেও তা শেষ হয়েছে প্রায় ১০ দিন। এরমধ্যে তিনি নতুন কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেননি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর এই আন্দোলনেরও তীব্র সমালোচনা করা হয় বলে জানা গেছে।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় রফিকুল ইসলাম বলেন, এনসিটির সব বার্থ নিয়ে একটি টার্মিনাল, এটাকে বিভাজন করে পরিচালনার কোনো অবকাশ নেই। এদিকে ২১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চবক’র শেষ সভায় এনসিটির টেন্ডার আহ্বানের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সভায় এনসিটির ৪টি বার্থ ও নারায়ণগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনাল প্রাইভেট অপারেটরদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে বন্দর ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়ী নেতারা মনে করেন, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে রাজনীতির উর্ধে উঠে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে দ্রুত টার্মিনাল চালু করা প্রয়োজন। এ নিয়ে রশি টানাটানি আরও দীর্ঘায়িত হলে সামগ্রিক অর্থনীতিরই ক্ষতি হবে। প্রসঙ্গত এনসিটির নির্মাণ কাজ ৭ বছর আগে সম্পন্ন হলেও অপারেটর নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতায় এর পূর্ণাঙ্গ অপারেশন কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না । ১ হাজার মিটার দীর্ঘ এই টার্মিনালে কন্টেইনার ধারণক্ষমতা প্রায় ৫ লাখ। এখানে একই সঙ্গে ৫টি জাহাজ ভিড়তে পারবে।

সর্বশেষ খবর