রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-ভারত সংলাপ ১৪ ও ১৫ নভেম্বর

যোগ দেবেন সব সাবেক কূটনীতিক

বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সর্বাধিক উষ্ণ থাকার পরও দুই দেশের সব সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কোন প্রক্রিয়ায় এই সম্পর্ককে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা খুঁজতে ঢাকায় এক সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ও ভারতের হয়ে দুই দেশে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বপালন করা পদস্থ কূটনীতিকরা। আগামী ১৪ ও ১৫ নভেম্বর এ সম্মেলন আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। এতে সহায়তা করছে ভারত-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। আয়োজকদের আশা, হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্বপালন করাদের মধ্যে জীবিত সবাই এই সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করে সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশমালা দুই দেশের সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন।জানা যায়, ১৯৭১ সালের পর থেকে বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনারদের মধ্যে মোট নয়জন এখন জীবিত। তাদের সবাইকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দুজন অসুস্থতার জন্য আসতে পারছেন না। বাকি সাতজনই আসবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের যে কূটনীতিকরা নয়াদিল্লিতে হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরও সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিতের তালিকায় আরও আছেন দিল্লি ও কলকাতায় দায়িত্ব পালন করা ডেপুটি হাইকমিশনাররাও। আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করা এসব কূটনীতিকের সম্পর্কের অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে বাস্তবজ্ঞান আছে। তারা এই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে করণীয় সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে পরামর্শ দেবেন। এ সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে সুপারিশমালা সরকারগুলোর কাছে পৌঁছানো হবে। বিশেষ সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়নে কৌশল সম্পর্কেও কূটনীতিকদের কাছ থেকে ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তির বাস্তবায়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কারণ এর মাধ্যমে ছিটমহল বিনিময়, অপদখলীয় ভূমির হস্তান্তর এবং অচিহ্নিত স্থলসীমান্ত চিহ্নিত হয়ে যাবে। ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হতে পারে। বিশেষ করে সীমান্ত হত্যা বন্ধে বাংলাদেশের উদ্বেগ এবং অনুপ্রবেশ বন্ধে ভারতের দুশ্চিন্তার অবসানে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নকে মাধ্যম হিসেবে মনে করা হচ্ছে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী ভারতের পার্লামেন্টের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে পাসের চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী ২৪ নভেম্বর শুরু হয়ে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এ অধিবেশন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিগত সরকার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপন করেছিল, তখন এর বিরোধিতা করে বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি। এখন বিজেপির পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়ায় বিলটি পাস হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এ নিয়ে আসামের বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার বিষয় আছে কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতাদের। আর বিলটি বর্তমানে পার্লামেন্টারি স্থায়ী কমিটির সুপারিশের অপেক্ষায় রয়েছে এ বিল। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল ও অপদখলীয় জমি বিনিময় এবং সাড়ে ছয় কিলোমিটার অচিহ্নিত সীমান্ত চিহ্নিত করার মতো অমীমাংসিত বিষয়গুলো সুরাহায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ’৭৪-এর স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রটোকলটি স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশের সংসদে এর অনুসমর্থন হলেও ভারতের সংসদে অনুসমর্থনের অপেক্ষায় আছে এটি।

সর্বশেষ খবর