রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
দুর্নীতির দুই মামলা

আজ আদালতে যাবেন খালেদা জিয়া

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ আদালতে হাজির হবেন। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অস্থায়ী বিশেষ এজলাসে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বেগম জিয়া হাজির হবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। বর্তমানে এই দুই মামলার বিচার চলছে এখানে। এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর দুই মামলার  মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছেন বিচারক বাসুদেব রায়। ওই দিন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদকে সাক্ষী হিসেবে আংশিক জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এসময় সাক্ষী হারুন-অর-রশিদ তার নাম-পরিচয় দিয়ে আদালতকে বলেন, এই মামলার আসামি বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করতে    সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখায় হিসাব খোলেন। সাক্ষীর এই আংশিক জবানবন্দি শেষে ১৩ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। পরে ওই দিন বেগম জিয়ার আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করলে পরবর্তীতে আজ সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।

মামলার নথি সুত্রে জানাগেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা দুটি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করে আদালত। পরে এ দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে গেলেও তা খারিজ হয়ে যায়। পরে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা দুটি রিভিশন আবেদন করেছিলেন, সেগুলোও হাই কোর্টে খারিজ হয়। এরপরে হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে করা খালেদার আবেদন বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন।
জিয়া অরফানেজ মামলা:     
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রাজধানী রমনা থানায় মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-আর-রশিদ । মামলায় অভিযোগ করা হয়, এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশী ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করেছে আসামিরা। মামলার অপর আসামিরা হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। তারেক রহমান সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশের বাইরে আছেন। এই মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযেগ পত্র দাখিল করা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল মামলা:
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ। মামলার অভিযোগ করা হয়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। এছাড়া জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ করা হয়। পরে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ২০১১ সালের ৮ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডক্টর জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে।

সর্বশেষ খবর