বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
ওয়াশিংটন দূতাবাসের চিঠি

জিএসপি স্থগিতের পরও রপ্তানি বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক জিএসপি সুবিধা স্থগিতের কোনো প্রভাব পড়েনি বাংলাদেশে। উপরন্তু যেসব পণ্য বিশেষ সুবিধায় দেশটিতে রপ্তানি হতো চলতি বছরে সেসব পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ আরও বেড়েছে। অন্যদিকে জিএসপি স্থগিতের ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে চীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনের (ইউএসআইটিসি) বরাত দিয়ে সম্প্রতি ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সরকারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২২টি দেশকে জিএসপি অ্যালায়েন্সের আওতায় রপ্তানি খাতে বিশেষ সুবিধা দিত যুক্তরাষ্ট্র, যেটি গত বছরের মাঝামাঝি থেকে স্থগিত করে দেয় দেশটি। এ ধরনের সিদ্ধান্তের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত দেশগুলোর রপ্তানি কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। চিঠিতে বলা হয়, ওই আশঙ্কা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সত্যি না হলেও যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের সিদ্ধান্তে কয়েকটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেসব দেশ বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে উজবেকিস্তান, প্যারাগুয়ে, লেবানন, মিসর, তিউনিশিয়া এবং ইউক্রেন। এসব দেশের রপ্তানির পরিমাণ কম হওয়ায় তারা মার্কিন বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। উপরন্তু অতিরিক্ত করারোপের ফলে আমদানিকারকরাও আর ওই দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে একচেটিয়া প্রাধান্য থাকায় চীন এর পুরো সুবিধা ভোগ করছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই চিঠিতে জিএসপি সুবিধা পেত বাংলাদেশের এমন তিনটি প্রধান পণ্যের গত তিন বছরের রপ্তানি পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে জিএসপি সুবিধায় ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার, যা ২০১৩ সালে ১৩ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। অপরদিকে জিএসপি স্থগিতের পর চলতি বছরের (জানুয়ারি-জুলাই) প্রথম সাত মাসে পণ্যটি রপ্তানি হয়েছে ৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার। ২০১২ সালে দেশটিতে তামাক পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছর কিছুটা কমে ১৪ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। তবে চলতি বছরের সাত মাসে তামাক রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৯ দশমিক ০৩ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে সিরামিক পণ্যে ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যাতে গত বছর সাড়ে ৬ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়। ওই পণ্যটি চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে প্রায় চার মিলিয়ন ডলার। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, জিএসপি সুবিধা পেয়ে যেসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হতো ওই সুবিধা স্থগিতের পরও সংশ্লিষ্ট পণ্যে রপ্তানিপ্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ার বিষয়টি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ নিজেও স্বীকার করেছেন। সোমবার বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি জোনাথন জাট-এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন, জিএসপি স্থগিত করায় আমাদের রপ্তানি কমেছে, এটি ঠিক নয়। বরং সেখানে আমাদের রপ্তানি আরও বাড়ছে।

সর্বশেষ খবর