বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

যত্রতত্র রাস্তা পারে ৩৩১ জনের অর্থদণ্ড

যত্রতত্র রাস্তা পারে ৩৩১ জনের অর্থদণ্ড

ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা পারাপারের দায়ে বাংলামোটর থেকে বেশ কয়েকজন পথচারীকে জরিমানা করা হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বেলা ১টা ৩০ মিনিট। গতকাল রাজধানীর বাংলামটর মোড়। রাস্তার পাশে ‘যত্রতত্র রাস্তা পারাপার দণ্ডনীয় অপরাধ’ লেখা একাধিক বড় ব্যানার। মাইকে চলছিল ওভারব্রিজ ব্যবহারের জন্য বিরতিহীন ঘোষণা। কিন্তু কে শোনে কার কথা! কিছুই কর্ণপাত না করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুদ আহমদ পুলিশ বক্সের পাশ দিয়ে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। আর তখনই পুলিশের চিৎকার। ওই পাড়ে পৌঁছা মাত্রই তাকে ধরে ফেললেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল কুদ্দুস। ছাত্রকে ৫০ টাকা জরিমানা করা হলো। পরে মাসুদ এ প্রতিবেদককে বললেন, ‘আমি বিষয়টি বুঝতে পারিনি। এভাবে আরও কিছুদিন মোবাইল কোর্ট চালাতে হবে। নইলে তা কাজে আসবে না। আমি আমার ভুলে অনুতপ্ত।’ বিকাল পৌনে পাঁচটা। একই স্থান। ৫৫ বছর বয়স্ক ইব্রাহিম ওভারব্রিজ বাদ দিয়ে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আদালতের কাছে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। তবে ওই ব্যক্তি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বারবার বলছিলেন, ‘আমি আপনাদের কোনো ঘোষণা শুনিনি।’ এক পর্যায়ে তাকে ২০ মিনিট ট্রাফিক বক্সের ভেতর আটকে রাখার নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার ঠেকাতে গতকাল পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর ফার্মগেট থেকে রূপসী বাংলা হোটেল মোড় পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ পরিচালনা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় ট্রাফিক আইন অমান্যকারী ৩৩১ জনকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হারে আর্থিক জরিমানা করা হয়। তবে কাউকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়নি। সকাল ৯টা থেকে রূপসী বাংলা হোটেল থেকে ফার্মগেট পুলিশ বক্স পর্যন্ত এই বিশেষ অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তায় বিভিন্ন মোড়ে প্রায় দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, গতকাল সকাল ৯টা থেকে হোটেল সোনারগাঁও মোড় ও বাংলামটরে দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ শুরু করে। পরে ফার্মগেটেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। আইন অমান্য করে সড়ক পার হওয়ায় সারা দিনে ৩৩১ জনকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২৪ হাজার ৯৫ টাকা।
ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগেই ডিএমপি কমিশনার এই অভিযানের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। তারপর তিন দিন জনসচেতনামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে ডিএমপি। অতঃপর পূর্ব ঘোষণা অনুসারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। আগামী সাত দিন এই অভিযান চলবে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দণ্ডপ্রাপ্তদের বেশিরভাগ পথচারী সকালেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের সম্মুখীন হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আইন অমান্যকারীদের সংখ্যাও কমতে থাকে। এ সময় জরিমানা দিতে না পারায় একাধিক পথচারীকে সড়কের পাশেই ছয় ঘণ্টা আটক রাখার পর মুক্তি দেওয়া হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, সড়কে মৃত্যু হ্রাস এবং ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই জনসচেতনতার অংশ হিসেবে ডিএমপি এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

সর্বশেষ খবর