শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
শুক্রবারের বিশেষ প্রতিবেদন

সৌরবিদ্যুতের আলোয় আলোকিত গ্রামবাংলা

সৌরবিদ্যুতের আলোয় আলোকিত গ্রামবাংলা

প্রত্যন্ত যেসব গ্রামে এখনো বিদ্যুতের তার সংযোগ ঘটেনি সেসব লোকালয়ে সৌরবিদ্যুতের আলো কেটে দিচ্ছে রাতের আঁধার। এর ফলে পড়ালেখা, কৃষি কাজ, টিভি দেখাসহ দৈনন্দিন কাজে এসেছে স্বস্তি। অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণাও এখন অনেকটা লাঘব করছে সৌরবিদ্যুৎ। গত এক দশকে দেশের যে খাতগুলোয় অভাবনীয় সাফল্য এসেছে সৌরবিদ্যুৎ তার অন্যতম। দেশে এখন সৌরবিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছেন প্রায় ২ কোটি মানুষ। ব্যবহার সহজ, দামও সাশ্রয়ী। তাই দিন দিন এর কদর বাড়ছে। তবে শহরের তুলনায় গ্রাম ও প্রত্যন্ত এলাকায় সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বেশি।
আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থা (ইরিনা) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়- বাংলাদেশ সৌর জ্বালানিতে ২০১৩ সালে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে তা স্পেনের মোট কর্মসংস্থানের সমান। ইরিনার প্রতিবেদনে এক দশক আগে যেখানে হোম সিস্টেম প্রোগ্রামের (এসএইচএস) ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার তা এখন বেড়ে ৩৫ লাখে দাঁড়িয়েছে। আর সৌরবিদ্যুতের প্যানেল বিক্রি, স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় সোয়া লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। ঘরবাড়ি ছাড়াও শিল্প কারখানা ও অন্যান্য কর্মপ্রতিষ্ঠানেও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে বিকল্প জ্বালানির মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ এগিয়ে যাচ্ছে। এর কারণ এটি ব্যবহারে সাশ্রয়ী। তবে প্রাথমিক নির্মাণ ও ব্যাটারি খরচ সাধারণের নাগালের মধ্যে আনা সম্ভব হলেই এর ব্যবহার আরও বাড়বে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিসংখ্যান ব্যুরো ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। ঢাকার প্রধান সড়কগুলোর বহু বাতিও এখন সৌরবিদ্যুতের আলোয় জ্বলছে। এ ছাড়া সরকার বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা মেটাতে প্রতিটি উচ্চভবন নির্মাণের সময় সৌরবিদ্যুতের প্যানেল স্থাপনে বাড়িমালিকদের উৎসাহিত করছে। ইডকল সূত্র জানায়, বর্তমানে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট। প্রতি মাসে প্রায় ৬৫ হাজার বাড়িতে নতুন করে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল স্থাপন হচ্ছে। ইতিবাচক বিষয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে এটি দ্রুত ও সফলতম সৌরবিদ্যুৎ কর্মসূচি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সরকার ২০১৭ সালের মধ্যে ৬০ লাখ বাড়ি সৌরবিদ্যুতের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। আর এ সময়ের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২২০ মেগাওয়াট। প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্বব্যাংক ও জিইএফের সহায়তায় এ প্রকল্প শুরু হলেও পরে জিআইজেড, কেআইডব্লিউ, এডিবি, আইডিবি, জাইকা, ইউএসএইড, ডিএফআইডির মতো আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা এ প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর