বৃহস্পতিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভিত্তিপ্রস্তরেই শেষ চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেল লাইন

ভিত্তিপ্রস্তরেই শেষ চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেল লাইন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

অর্থাভাবে ভিত্তিপ্রস্তরেই আটকে আছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। পাঁচ বছরেও উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতি নেই এ প্রকল্পের। প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২২ কোটি টাকা, যা দিয়ে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ কাজও শেষ করা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সরকারের মেয়াদেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত শুরু করা যায়নি প্রকল্পের কাজ। অবশ্য কয়েক মাস আগে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর দোহাজারী থেকে রামু, কক্সবাজার ও ঘুমধুম পর্যন্ত মিটার-গেজ রেলপথ নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে; যাতে দোহাজারী থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটারের রেলপথ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ১২৮ কিলোমিটারের মধ্যে দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব হবে ৮৯ কিলোমিটার। রামু থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণ করা হবে অতিরিক্ত আরও ১১ কিলোমিটার। আবার রামু থেকে দক্ষিণ দিকে মিয়ানমার সীমান্ত উখিয়ার ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ করা হবে আরও ২৮ কিলোমিটার। এ ১২৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, কক্সবাজারের চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাহ, রামু, কক্সবাজার সদর ও উখিয়ায় নির্মাণ করা হবে নয়টি রেল স্টেশন। এ রেলপথে নির্মাণ করতে হবে ৪৭টি সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট ও ৫২টি পাইপ কালভার্ট। প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-ঘুমধুম রেল লাইন নামের এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে শুরুতেই অর্থ সংকটে পড়েন সংশ্লিষ্টরা। কারণ প্রকল্পের জন্য ২০১১-১২ অর্থবছরে মাত্র ২২ লাখ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে মাত্র ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে; যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ কারণে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণে জরিপ পরিচালনা করা হয়। পরবর্তীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রকল্পটি চাপা পড়ে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা রেল লাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পর্যটন শহর কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটক বাড়বে। এতে সরকার আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

সর্বশেষ খবর