বৃহস্পতিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বার্থে কাজ করছে না

আল্লামা আহমদ শফী

রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বার্থে কাজ করছে না

আল্লামা আহমদ শফী

‘রাজনৈতিক দলগুলো দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করছে না’ বলে অভিযোগ করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা আহমদ শফী। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করার মানসিকতা নেই বলেই দেশে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তাদের দ্রুত সংলাপে বসে সমাধান খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছি। দেশের জনগণ ও শান্তি-শৃঙ্খলার প্রয়োজনে হেফাজতে ইসলাম যে কোনো সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে প্রস্তুত।’
হেফাজত আমির বলেন, চলমান রাজনৈতিক সংকট, খুন-খারাবি, অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও জান-মালের নিরাপত্তাহীনতা উদ্বেগজনক। বিবদমান দলগুলোকে অবিলম্বে সংলাপের মাধ্যমে সংকট উত্তরণের উপায় বের করতে হবে। অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম কোনোভাবেই দমন-পীড়ন, জ্বালাও-পোড়াও ও দলীয় স্বার্থের রাজনীতি চায় না, শান্তি চায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সংকটের দ্রুত অবসান হয়ে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক। রাজনৈতিক সংকটের সমাধান রাজনৈতিকভাবেই আসতে হবে, ছাড় দেওয়ার মানসিকতা ছাড়া কখনোই সংকটের সুরাহা হবে না। এভাবে জান-মালের নিরাপত্তাহীনতা বাড়তে থাকলে একসময় আইন ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়দায়িত্ব এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক।’ হরতাল-অবরোধ এবং নাশকতাকে হেফাজতে ইসলাম সমর্থন করে না এ কথা জানিয়ে আল্লামা শফী বলেন, জনগণের কাছে সরকারের যে কাজ ন্যায্য মনে হবে না, তার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সুযোগ থাকা উচিত। তিনি দাবি করেন, ‘হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও আমরা দেখেছি, সরকার সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেয়ে বলপ্রয়োগে বেশি আগ্রহী।’ হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে ইমান-আকিদা ভিত্তিক ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে। এ ছাড়া নাস্তিক্যবাদ ও ইসলামবিদ্বেষীদের যে কোনো অপতৎপরতার ব্যাপারে হেফাজতে ইসলাম সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখছে। সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর বহিষ্কার এবং শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী মুসলিম নারীদের অপরিহার্য পালনীয় পর্দা ও হিজাব নিয়ে এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ইসলামে নিষিদ্ধ সুদ-ঘুষের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ইসলাম ও নৈতিকতা বিরোধী জঘন্য বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। এর কড়া প্রতিবাদ জানানো আমাদের ইমানি দায়িত্ব। সরকারের মন্ত্রিসভা ও কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে এত ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক্যবাদী কী করে স্থান পেলেন, তা জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে।’ আল্লামা শফী মনে করেন, দেশে অনৈতিকতা, বেহায়াপনা ও জোর-জুলুম বিস্তারের পাশাপাশি রসুল (সা.)-কে অবমাননা ও ইসলামবিরোধী বক্তব্য গত কয়েক বছরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে এটা আমাদের জন্য খুবই বাজে উদাহরণ। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।’

সর্বশেষ খবর