শনিবার, ২৩ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

প্রচণ্ড দাবদাহে দেশজুড়ে নাভিশ্বাসে মানুষ। পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসপাতালে গতকাল হাতপাখার বাতাসে এক রোগীর স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীসহ সারা দেশে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। আগুন ঝরা রোদে হাঁপিয়ে উঠছে জনজীবন। এমনকি স্বস্তি পাচ্ছে না প্রাণিকুলও। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে হাপিত্যেশ করছে সবাই। অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, বর্ষাকাল না আসা পর্যন্ত খুব শিগগিরই ভারী বর্ষণেরও কোনো সম্ভাবনা নেই। গতকাল রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায় ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিস কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও ভারী বর্ষণ বন্ধ রয়েছে। বর্ষাকাল না আসা পর্যন্ত ভারী বর্ষণের তেমন কোনো সম্ভাবনাও নেই। তবে দুই-তিন দিন পর তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে। জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে খুলনা, রাজশাহী এবং ঢাকায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও গরমের তীব্রতা বেশি হওয়ায় শীতল হচ্ছে না প্রকৃতি। বরং ভ্যাপসা গরমে আরও অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে মানুষ। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র পানি ও বিদ্যুৎ সংকট। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা গেছে, বর্তমানে ঢাকা, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, বরিশাল, খুলনা ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর, মুগদা, ধলপুর, সায়েদাবাদ, গেণ্ডারিয়া, সূত্রাপুর, তাঁতীবাজার, রাজারদেউড়ি, শেখেরটেক, মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশন ও ইব্রাহিমপুরের বিভিন্ন জায়গায় পানির সংকটে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কিছু এলাকায় দিনভর পানি না পাওয়া গেলেও গভীর রাতে ওয়াসার সরবরাহকৃত লাইনে পানি আসছে। এ কারণে এসব এলাকার বাসিন্দারা পানির জন্য রাত জেগে থাকছেন। কিছু এলাকায় টানা কয়েক দিন পানি থাকে না। আবার কিছু এলাকায় দিনে মাত্র একবার পানি আসে। এ জন্য কোথাও কোথাও মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। নগরীর কিছু এলাকার পানি আবার এত দুর্গন্ধময় ও ময়লা যে, তা ব্যবহারের অনুপযোগী। ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন এলাকায় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপের কার্যক্ষমতা কমে গেছে। আর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।

রাজশাহী : তাপমাত্রার সর্বোচ্চ রেকর্ড নিয়ে গতকাল খরতাপে পোড়ে রাজশাহী অঞ্চল। দুই সপ্তাহ ধরে সেখানে বৃষ্টির দেখা নেই। তীব্র রোদে ফেটে চৌচির হয়েছে বরেন্দ্রভূমি। অসহনীয় গরমে গাছে থাকা আম ও লিচু পাকার আগেই ঝরে পড়ছে। শুকিয়ে বিবর্ণ ফসলের সবুজ মাঠ। ভ্যাপসা গরম নিয়ে আকাশ পানে চেয়ে আছে ওই অঞ্চলের মানুষ।

বরিশাল : বরিশালে গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মৌসুমের সর্বোচ্চ। গত কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৬ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। দিনে এমনকি গভীর রাতেও চলছে লোডশেডিং। নগরবাসীর পাশাপাশি একই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মুলাদী, মেহেন্দিগঞ্জ, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জ, নলছিটি, ঝালকাঠি ও স্বরূপকাঠির মানুষ। বিদ্যুতের চাহিদা ১০০ মেগাওয়াটের বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি পূরণে ফিডারে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে অন্তত ৮ ঘণ্টা।

বগুড়া : মৃদু তাপপ্রবাহ আর গরমে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে জেলার বাসিন্দারা। গতকাল বিকাল ৩টায় জেলায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড গরমে মানুষ, পশু-পাখিসহ সব প্রাণীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছে। এমনকি তাপমাত্রার কারণে অন্য ছুটির দিনের তুলনায় রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা।

 

সর্বশেষ খবর