শনিবার, ২৩ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

শিক্ষকদের বেতন, পরীক্ষার ফলাফল বন্ধ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৯ জন শিক্ষক দুই মাস ধরে মাসিক বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। উপাচার্য নেই, নতুন উপাচার্য নিয়োগও হচ্ছে না। একই সঙ্গে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক না থাকায় শিক্ষার্থীদের রেজাল্টও প্রকাশ করা যাচ্ছে না। হচ্ছে না নতুন সেমিস্টারে ভর্তিও। আটকে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব একাডেমিক সিদ্ধান্ত। সব কিছু মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে অচলাবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগ দিতে শুরু থেকেই দায়িত্বশীল মহলের অনীহা ছিল। ফলে প্রথম উপাচার্য ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ খানকে একাই প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পাঁচ ফ্যাকাল্টির ডিন ও ১১ বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হয়। কারণ এসব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় চার বছরের মেয়াদ শেষ করে গত ১৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেছেন ড. হারুনুর রশীদ। তখন থেকেই আটকে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

তারা আরও জানান, শিক্ষকরা ক্লাস ও অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ব্যাংক চেকে স্বাক্ষরকারী কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতির কারণে ৩৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের মাসিক বেতন-ভাতার কিছুই উঠাতে পারছেন না। আটকে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক, প্রশাসনিক ও একাডেমিক বহু সিদ্ধান্ত। যার মধ্যে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট, পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেও পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ভিসি না থাকায় পাঁচটি বিভাগের ২০১১-১২, ১২-১৩ এবং ১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ফলাফল আটকে গেছে। নতুন ভিসি না আসা পর্যন্ত এ ফলাফল প্রকাশ করা যাবে না। অথচ ফলাফল প্রস্তুত হয়ে আছে প্রায় দুই মাস আগে। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের মধ্যে শুধু কলা ও মানবিক অনুষদে আছেন একজন ডিন। বাকি পাঁচ অনুষদের ডিনের দায়িত্বে ছিলেন আগের ভিসি। এ কারণে এসব অনুষদের একাডেমিক কার্যক্রমও আটকে যাওয়ার মুখে রয়েছে। এ ব্যাপারে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান দিল আফরোজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সব সমস্যা মিটে যায় উপাচার্য পদে নিয়োগ দিলেই। কিন্তু সেটাই দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে এক কর্মকর্তা গতকাল জানিয়েছেন, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের জন্য লবিং করছেন। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাদের নিয়োগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণেই বিলম্ব হচ্ছে। তিনি জানান, শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব বিদেশ থেকে ফেরার পরপরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

সর্বশেষ খবর