সোমবার, ৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাজার সেজেছে সুতি তাঁত মসলিন জামদানিতে

বাজার সেজেছে সুতি তাঁত মসলিন জামদানিতে

বাঙালি নারীর সুতি ও তাঁতের শাড়ির প্রতি আবেদন বরাবরই ছিল। সাধারণ সময় তো বটেই, উৎসবেও রুচিশীল বাঙালি নারী এখন আধুনিক নকশার বৈচিত্র্যময় শাড়ি পরে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। নারীদের সুতির শাড়ি নিয়ে দেশীয় বুটিক ও ফ্যাশন হাউসগুলো বরাবরই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছে। এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ফ্যাশন-সচেতন তরুণী ও নারীদের জন্য এবার ঈদে বুটিকগুলো সুতির পাশাপাশি হাফ সিল্ক, জর্জেট, জামদানি, মসলিন ও টিস্যু শাড়ি এনেছে। এতে নতুনত্ব আনতে প্রিন্টের কাজ, ব্লক সিকোয়েন্স, মেশিন এমব্রয়ডারি, টারসেল, নকশিকাঁথা ও হাতের কাজ করা হয়েছে। অন্যদিকে ভারী কাজের নকশার শাড়ি পছন্দ করেন এমন নারীর সংখ্যাও কম নয়। তাদের খুশি করতে নগরীর বিভিন্ন বিপণিবিতানের শাড়ির দোকানদাররা ভারতীয় নকশার বিভিন্ন শাড়ি এনেছেন। ফলে ঈদে এবার দেশি শাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতা চলছে বিদেশি শাড়ির। বিভিন্ন বুটিক হাউসের মধ্যে কে-ক্রাফট, অঞ্জনস, বিবিয়ানা ও নগরদোলা ঘুরে দেখা যায়, গরমের কারণে এবার ক্রেতাদের কাছে সুতি ও তাঁতের শাড়ির চাহিদা বেশি। আর ক্রেতাদের আরামের কথা মাথায় রেখে এ হাউসগুলোতে সুতির শাড়িতে হালকা কাজ করা হয়েছে। এ ছাড়া সিল্কের শাড়িতে কন্ট্রাস কাজ, যেমন শাড়ি সিল্কের হলে আঁচল মসলিনের করা হচ্ছে। শাড়িতে নকশিকাঁথার প্রাধান্যও দেখা যাচ্ছে। এর বাইরে সিল্কের ওপর অ্যাপলিকের কাজও আছে। বর্ষা ও গরমের কথা মাথায় রেখে শাড়িতে বেগুনি, নীল, হলুদ, সবুজ ও গোলাপি রঙের ব্যবহার করা হয়েছে।
ফ্যাশন হাউস কে-ক্রাফটের বিক্রয়কর্মীরা জানান, ঈদে এবার হাফসিল্ক, মসলিন শাড়িতে স্ক্রিন প্রিন্ট ও মেশিন এমব্রয়ডারি, টাইডাই ও টাসেল থাকছে। শাড়ির দাম রাখা হয়েছে সাড়ে তিন হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। বিভিন্ন বুটিকের বিক্রয়কর্মীরা জানান, সাধারণত তাদের কটন ও অ্যান্ডি কটন শাড়ির দাম ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার টাকা। এ ছাড়া মসলিন ও সিল্কের কাজ করা শাড়ির দাম পড়ছে পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা। কাতান শাড়ি চার থেকে ১৫ হাজার টাকা। জামদানি শাড়ি তিন থেকে ২০ হাজার টাকা। ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ের জামদানি শাড়িতে এ ঈদে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। হাফসিল্ক ও মসলিন জামদানি শাড়িতে প্রিন্টের ব্যবহার লক্ষণীয়। কিছু শাড়ির পাড়ে ঝুল লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও আড়ংয়ে সুতি ও নকশিকাঁথা শাড়ির প্রতি ক্রেতার ভালো চাহিদা আছে। এর বাইরে অন্য বুটিক হাউসগুলোতে ঈদে রাজশাহী সিল্ক, মসলিন, বালুচরি, কাতান, হাফসিল্ক, চোষা ইত্যাদি শাড়ির বিক্রি বেশি। তবে এবার ব্লাউজের নকশায় বেশ বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। প্রিন্টের নকশা বা এক রঙের শাড়ির সঙ্গে ভারী কাজের ব্লাউজ এবার বেশি চলছে। এ ছাড়া দিন গড়ানোর সঙ্গে মিরপুরের বিখ্যাত বেনারসি পল্লীতেও বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। এখানে বিখ্যাত কাতান শাড়িতে এবার পাথরের কাজ প্রাধান্য পেয়েছে। বিভিন্ন ধরনের কাতানের মধ্যে জুট কাতান, ধুপিয়ান কাতান, কাঞ্চিভরম, মসলিন কাতান, অপেরা কাতানের চাহিদা ভালো। এ ছাড়া ভারতীয় বিভিন্ন নকশার শাড়ির প্রতিও ক্রেতাদের আগ্রহ লক্ষণীয়। এ পল্লীর বিক্রেতারা জানান, সাধারণত রোজার মাঝামাঝি থেকে তাদের বিক্রি জমে ওঠে। অন্যদিকে নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, মৌচাক শপিং মল, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, রাপা প্লাজা ও ইস্টার্ন প্লাজায় ঈদের জন্য বৈচিত্র্যময় নামের ভারী কাজ করা ভারতীয় শাড়ি আনা হয়েছে। ঈদে অভিজাত শপিং হাউস ‘স্টাইল ওয়ার্ল্ড’-এ ঐতিহ্যবাহী দেশি শাড়ির পাশাপাশি ভারতীয় কাজ করা শাড়ির প্রতিও ক্রেতার ভালো চাহিদা আছে। এ ফ্যাশন হাউসে ভারতের কাঞ্চিভরম, অপেরা কাতান, কোরা কাতান শাড়ি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ হাজার, সাড়ে ১৪ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন দামে। এ ছাড়া বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে এবার ‘আনারকলি’ শাড়ির বিক্রি বেশি। পাড়বিহীন এ শাড়ির জমিনে পাথর, পুঁতি ও জরির কাজ থাকে। রেশমি সুতার জমকালো শাড়িগুলোর দাম ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।

সর্বশেষ খবর